প্রতিদান কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
এ কবিতায় কবি ক্ষুদ্র স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে পরার্থপরতার মধ্যেই যে ব্যক্তির প্রকৃত সুখ ও জীবনের সার্থকতা নিহিত সেই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।
সৃজনশীল প্রশ্ন নম্বর ১
আকাশ আমায় শিক্ষা দিল উদার হতে ভাই রে,
কর্মী হবার মন্ত্র আমি বায়ুর কাছে পাইরে।
মাটির কাছে সহিষ্ণুতা পেলাম আমি শিক্ষা।
ক. জসীমউদ্দীনের একটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখ।
খ. “তার লাগি আমি কাদি”- কবি কার জন্য কাঁদেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের শেষ দু চরণ প্রতিদান’ কবিতার কোন দিকটি নির্দেশ করে?
ঘ. উদ্দীপকের কবির চেতনা প্রতিদান’ কবিতার কবির চেতনার সমান্তরাল।”- মন্তব্যটি বিচার কর।।
সৃজনশীল প্রশ্ন নম্বর ১ এর উত্তর সমূহ
ক উত্তরঃ ‘রঙিলা নায়ের মাঝি’ জসীমউদ্দীনের একটি কাব্যগ্রন্থ।
খ উত্তরঃ কবির বুকে যে আঘাত হেনেছে কবি তার জন্য কাঁদেন। সমাজে একশ্রেণির মানুষ আছে যারা কথা, আচরণ ও কাজ দিয়ে সবসময় অন্যকে আঘাত করে। তারা একবারও চিন্তা করে না যে, তাদের এমন আচরণের কারণে মানুষ কষ্ট পেতে পারে। কবিও এমন মানুষ দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হন।
কিন্তু ক্ষমাশীল ও ধৈর্যশীল কবি তাদের আঘাতের পরিবর্তে ভালােবাসা দান করেন। যারা কবিকে আঘাত করে, প্রতিদানে কবি তাদের মঙ্গলচিন্তা করে কাঁদেন। তিনি চান তাঁকে আঘাত করা ব্যক্তিটি ভালাে থাক।
সারকথা : যে ব্যক্তি সারা জীবন কবির বুকে আঘাত করেছে কবি তার জন্য কাঁদেন।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকের শেষ দুই চরণ ‘প্রতিদান’ কবিতার কবির সহিষ্ণুতার দিকটি নির্দেশ করে। এই পৃথিবীতে মানুষ বিভিন্ন মানবিক গুণাবলি নিয়ে প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে। তার মধ্যে অন্যতম হলাে সহ্য করার ক্ষমতা যার যত বেশি সহ্য করার ক্ষমতা থাকে সে তত বেশি সফল মানুষ হয়ে ওঠে। ধৈর্যহীন মানুষ জীবনে সাফল্য লাভ করতে পারে না।
উদ্দীপকের শেষ দুই চরণে প্রকাশ পেয়েছে সহিষ্ণুতার কথা। কবি মাটির কাছ থেকে সহিষ্ণুতা অর্থাৎ সহ্য করার ক্ষমতা অর্জন করেন। মাটি যেমন প্রতিনিয়ত মানুষের বিভিন্ন অত্যাচার সহ্য করে, কবিও ঠিক তেমনই সহ্য ক্ষমতার অধিকারী হতে চান।
‘প্রতিদান’ কবিতার কবিও ঠিক তেমনই একজন সহিষ্ণু মানুষ। তিনি তার সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করা মানুষদের ক্ষমা করেছেন। যারা তাঁর সঙ্গে অন্যায় করে তিনি তাদের জন্যও বুকভরা ভালােবাসা নিয়ে দাড়িয়ে থাকেন। যারা তাকে পর ভেবে দূরে সরিয়ে দেয় তিনি তাদের আপন করে নেওয়ার জন্য হাহাকার করেন। উভয় জায়গায় সহিষ্ণু হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। তাই আমরা বলতে পারি যে, উদ্দীপকের শেষ দুই চরণ প্রতিদান’ কবিতার কবির সহিষ্ণুতার দিকটি নির্দেশ করে।
সারকথা : উদ্দীপকের কবি মাটির কাছ থেকে যে সহিষ্ণুতার শিক্ষা পেয়েছেন তা ‘প্রতিদান’ কবিতার কবির সহিষ্ণু আচরণের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে।
ঘ উত্তরঃ “উদ্দীপকের কবির চেতনা প্রতিদান’ কবিতার কবির চেতনার সমান্তরাল।”- মন্তব্যটি যথার্থ। ন্যায় ও নিষ্ঠাবান মানুষদের জন্য জন্য পৃথিবী এখনও সুন্দর। তাদের কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে মানুষ সুশৃঙ্খল ও সুন্দরভাবে জীবনযাপন করছে। আমাদের সবার উচিত প্রকৃত শিক্ষা নিয়ে মানবিক ও সুন্দর মানুষ হয়ে ওঠার চেষ্টা করা।
উদ্দীপকের কবিতাংশে আমরা দেখি, কবি প্রকৃতির বিভিন্ন অনুষঙ্গ থেকে উদার, কর্মঠ ও সহিষ্ণু হওয়ার শিক্ষা লাভ করেন। তিনি আকাশের কাছ থেকে উদার হতে শেখেন। কর্মী হতে শেখেন বায়ুর কাছে। আর মাটির কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করেন সহিষ্ণু হওয়ার ।
উদার, কর্মঠ ও সহিষ্ণুতা এসব মানুষের মানবিক বৈশিষ্ট্য যা একজন মানুষকে প্রকৃত মানুষ হতে সাহায্য করে । কবি এসব শিক্ষার মধ্য দিয়ে নিজেকে মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছেন। অন্যদিকে প্রতিদান’ কবিতার কবিও এমন উদার, মানবিক ও মহৎ বৈশিষ্ট্যের মানুষ। যিনি নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে সবসময় অন্যের কথা চিন্তা করেন। তাঁর। কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মানবিকতা, ক্ষমাশীলতা ও পরার্থপরতা ফুটে উঠেছে।
উদ্দীপকের কবি ও প্রতিদান’ কবিতার কবি উভয়ের চেতনা একই। কারণ তারা পৃথিবীতে মানবিক মানুষ হতে চেয়েছেন। নিজেদের স্বার্থে নয়, পরার্থে কাজ করাই তাঁদের জীবনের লক্ষ্য। তাই তাদের চেতনাগত দিকও একই স্রোতধারায় প্রবাহিত। তাই আমরা বলতে পারি যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
সারকথা : চেতনাগত দিক থেকে উদ্দীপকের কবি ও প্রতিদান’ কবিতার কবি অভিন্ন। কারণ তারা উভয়েই মানবিক, উদার ও সহিষ্ণু।
সৃজনশীল প্রশ্ন নম্বর ২
পরপীড়া পরিহার, পূর্ণ পরিতােষ। সদানন্দে পরিপূর্ণ স্বভাবের দোষ। নাহি চায় আপনার পরিবার সুখ। রাজ্যের কুশল কার্যে সদা হাস্যমুখ৷ কেবল পরের হিতে প্রেম লাভ যার মানুষ তারেই বলি, মানুষ কে আর?
ক. প্রতিদান’ কবিতায় কবি কার ঘর বাঁধেন?
খ. কবি কার কূল বাঁধেন? কেন বাঁধেন ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে ‘প্রতিদান’ কবিতার প্রতিফলিত দিক কোনটি?
ঘ. উদ্দীপকের কবির আকাঙ্ক্ষার মানুষই ‘প্রতিদান’ কবিতার কবি” মন্তব্যটি বিচার কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন নম্বর ২ এর উত্তর সমূহ
ক উত্তরঃ যে কবির ঘর ভেঙেছে ‘প্রতিদান’ কবিতায় কবি তার ঘর বাঁধেন।।
খ উত্তরঃ অন্যের প্রতিহিংসার প্রতিদানে কবি ভালােবাসা দিতে চান বলেই যে কবির কূল ভাঙে কবি তার কূল বাঁধেন। প্রতিহিংসা মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। আর ভালােবাসা মানুষকে গড়তে শেখায়। সমাজে বসবাসরত প্রতিহিংসাপরায়ণ মানুষ।
কবির কূল ভাঙেন, কবিকে আঘাত করেন। প্রতিদানে উদারচিত্তের কবি এসব মানুষকে ভালােবাসা দিয়ে তাদের কূল বাঁধেন। যাতে তারা সমাজে প্রতিহিংসা ছড়াতে না পারে। তাই অন্যের প্রতিহিংসার প্রতিদানে কবি ভালােবাসা দিতে চান যে তার কূল ভাঙে, ভালােবেসে তিনি তার কূল বেঁধে দেন।
সারকথা : কবি তার কূল বাঁধেন যে তার কূল ভাঙে। কারণ তিনি সমাজকে প্রতিহিংসার হাত থেকে রক্ষা করতে চান।
গ উত্তরঃ উদ্দীপকে ‘প্রতিদান’ কবিতার প্রতিফলিত দিকটি হলাে মানুষের কল্যাণচিন্তা। | মানুষ মহৎ হয় তার মানবিক গুণাবলির মধ্য দিয়ে। অন্যের জন্য শুভ চিন্তা করা মানুষের একটি অন্যতম মানবিক গুণ। এই | গুণের কারণেই সমাজ-সংসার শান্তিপূর্ণ থাকে। আমাদের সবার উচিত মানুষের কল্যাণচিন্তা করা।
উদ্দীপকের কবিতাংশে বলা হয়েছে নিজের পরিবারের সুখ না চেয়ে রাজ্যের ভালাে কাজে সদা হাসিমুখে থাকা উচিত। যে মানুষ অন্য মানুষের কল্যাণ চিন্তা করে সেই মানুষই প্রকৃত মানুষ। প্রতিদান’ কবিতায়ও এই দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
কবি নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে সবসময় অন্যের কথা চিন্তা করেছেন। অন্যের সুখের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। যারাই তাঁকে আঘাত করেছে তাদেরই তিনি বুকে টেনে নিয়েছেন।
মূলত উদ্দীপক ও আলােচ্য কবিতায় অন্যের কল্যাণচিন্তা করে নিজের সুখ বিসর্জন দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। তাই আমরা বলতে পারি যে, উদ্দীপকে ‘প্রতিদান’ কবিতার প্রতিফলিত দিকটি হলাে মানুষের কল্যাণ কামনা করা।
সারকথা : উদ্দীপকের কবিতাংশে সেই মানুষকেই মানুষ বলা হয়েছে যে মানুষের কল্যাণ চিন্তা করে। প্রতিদান’ কবিতায়ও কবি মানবকল্যাণের কথা বলেছেন।
ঘ উত্তরঃ “উদ্দীপকের কবির আকাঙ্ক্ষার মানুষই ‘প্রতিদান’ কবিতার কবি”- মন্তব্যটি যথার্থ। আমাদের সমাজে একশ্রেণির মানুষ আছে যারা সবসময় নিজ নিজ চিন্তায় মগ্ন থাকে। আর একশ্রেণির মানুষ আছে যারা অন্যের কল্যাণ কামনায় জীবন উৎসর্গ করেন। অন্যের কল্যাণচিন্তা করা ব্যক্তিই প্রকৃত মানুষ ।
উদ্দীপকের কবিতাংশে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি পরপীড়া দূর করে সে পূর্ণ আনন্দ লাভ করে। এমন মানুষ নিজের পরিবারের সুখ চায় না। অন্যের সুখেই সে সুখী হয়। রাজ্যের সব কাজ সে হাসিমুখে করে। পরের কল্যাণ করার মধ্য দিয়েই সে প্রেম লাভ করে। কবি এ ধরনের মানুষকেই প্রকৃত মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
কবির আকাঙ্ক্ষার এমন মানুষই ‘প্রতিদান’ কবিতার কবি। কারণ প্রতিদান’ কবিতায় কবি নিজের সুখ-শান্তি বিসর্জন দিয়ে সবসময় অন্যকে আগলে রেখেছেন। কারও প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনােভাব পােষণ করেননি। সবাইকে ক্ষমা করে বুকে টেনে নিয়েছেন। তাদের বুক ভরা ভালােবাসা দিয়েছেন।
উদ্দীপকের কবিতাংশে কবি প্রকৃত মানুষ হিসেবে যেমন মানুষের কথা বলেছেন আলােচ্য কবিতার কবি তেমনই একজন মানুষ। কারণ তারা উভয়ই নিজ স্বার্থ ত্যাগ করে অন্যের জন্য নিবেদিতপ্রাণ। তাই আমরা বলতে পারি যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ। |
প্রতিদান কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : এক বুড়ি হযরত মুহম্মদ (স.) এর চলার পথে কাটা বিছিয়ে রাখতো এবং পথ চলতে নবির পায়ে কাটা ফুটলে আনন্দিত হতো । একদিন পথে কীটা না দেখে নবিজী চিন্তায় পড়ে গেলেন এবং বুড়ির বাড়িতে গিয়ে দেখলেন বুড়ি অসুস্থ । নবি (স.) কে দেখে বুড়ি ভীত হলেন । তিনি বুড়িকে ক্ষমা করে দিলেন এবং সেবাযত্র দিয়ে সুস্থ করে তুললেন ।
ক. কবি কাকে বুকভরা গান দেন?
খ. কবিকে যে পর করেছে তাকে আপন করার জন্য কেঁদে বেড়ান কেন?
গ. উদ্দীপকের ভাবের সাথে ‘প্রতিদান’ কবিতার মূলভাবের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপক ও ‘প্রতিদান’ কবিতার ভাবার্থ ধারণ করলে একটি সুন্দর সমাজ গড়া সম্ভব’- বক্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ :
প্রতিবেশী দাসদাসী আত্মীয়-স্বজন ভালোবাসি
সবে কহ সুমিষ্ট বচন
দিও না কাহারে দুখ।
অন্যে দান করি সুখ,
নিজেরে মানো গো সুখী, বালক সুজন।
ক. জসীমউদদীন কী হিসেবে সমধিক পরিচিত?
খ. কবি কার ঘর বাঁধতে চেয়েছেন? কেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের কোন উপদেশটি ‘প্রতিদান’ কবিতায় প্রকাশ পেয়েছে?
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘প্রতিদান’ কবিতার আংশিক ভাব প্রকাশ করেছে।” মন্তব্যটির সত্যতা নিরূপণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৩ : কিছুদিন পর আবার সেই ফেরেশতা পূর্বের মতো মানুষের রূপ ধরিয়া, সেই যে আগের ধবল রোগী ছিল তাহার নিকট উপস্থিত হইলেন। সেখানে গিয়া তিনি বলিলেন, আমি এক বিদেশি। বিদেশে আসিয়া আমার সব পুঁজি ফুরাইয়া গিয়াছে। এখন আল্লাহর দয়া ছাড়া আমার আর দেশে ফিরিবার উপায় নাই।… তোমার কাছে একটি উট চাহিতেছি। সে বলিল উটের অনেক দাম। কী করিয়া দিই? স্বর্গীয় দূত বলিলেন, ওহে! আমি যে তোমাকে চিনিতে পারিতেছি। তুমি না ধবল রোগী ছিলে, আর সকলে তোমাকে ঘৃণা করিত? তুমি না গরিব ছিলে, পরে আল্লাহ্ তোমাকে ধন-দৌলত দিয়াছেন? সে বলিল, না, তা কেন? এসব তো আমার বরাবরই আছে।
ক. জসীমউদ্দীনের মায়ের নাম কী?
খ. “যে মোরে করিল পথের বিরাগী, পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি।”— ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের ধবল রোগীর সঙ্গে প্রতিদান’ কবিতার কাদের সাদৃশ্য রয়েছে?
ঘ. “চেতনাগত দিক থেকে উদ্দীপকের ধবল রোগী আলোচ্য কবিতার কবির বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে।” মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৪ :
মসজিদে কাল শিরনি আছিল, অঢেল গোস্ত রুটি
বাঁচিয়া গিয়াছে, মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটি কুটি,
এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে আজারির চিন
বলে, বাবা, আমি ভুখা ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন
তেরিয়া হইয়া হাঁকিল মোল্লা-
“ভ্যালা হলো দেখি লেঠা,
ভুখা আছ মর গো-ভাগাড়ে গিয়ে! নামাজ পড়িস বেটা?”
ক. ‘কবর’ কবিতাটির রচয়িতার নাম কী?
খ. “আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা আমি বাঁধি তার ঘর।” – উক্তিটির মধ্য দিয়ে কবির কোন চেতনার প্রকাশ ঘটেছে।
গ. উদ্দীপকের মোল্লা সাহেবের সঙ্গে ‘প্রতিদান’ কবিতার কার বৈসাদৃশ্য রয়েছে?
ঘ. “উদ্দীপকের মোল্লা সাহেব যদি ‘প্রতিদান’ কবিতার কবির চেতনা ধারণ করত তবে মুসাফিরকে অভুক্ত থাকতে হতো না।” মন্তব্যটির যথার্থতা নির্ণয় কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৫ :
আকাশ আমায় শিক্ষা দিল
উদার হতে ভাই রে,
কর্মী হবার মন্ত্র আমি
বায়ুর কাছে পাইরে
মাটির কাছে সহিষ্ণুতা
পেলাম আমি শিক্ষা।
ক. জসীমউদ্দীনের একটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখ।
খ. কবি কার জন্য কাঁদেন? ব্যাখ্যা কর ।
গ. উদ্দীপকের শেষ দু চরণ ‘প্রতিদান’ কবিতার কোন দিকটিকে নির্দেশ করে?
ঘ. “উদ্দীপকের কবির চেতনা ‘প্রতিদান’ কবিতার কবির চেতনার সমান্তরাল ।” – মন্তব্যটি বিচার কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৬ : ফতেপুর গ্রামের সমিরউদ্দীন ও রহিমউদ্দীন দুই ভাই। বড়ো ভাই সমিরউদ্দীন ছোটো ভাই রহিমউদ্দীনকে ঠকিয়ে বাবার সঙ্গী সম্পত্তি আত্মসাৎ করে। বর্তমানে সমিরউদ্দীন ‘কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত। এই বিপদের দিনে কেউ তার পাশে নেই। কিন্তু ছোটো ভা রহিমউদ্দীন সব ভুলে সমিরউদ্দীনের পাশে দাঁড়িয়েছে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সে-ই ভাইকে সুস্থ করার আপ্রাণ চেষ্টা করছে।
ক. পল্লিকবি জসীমউদ্দীন কোন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন?
খ. ‘আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা আমি বাঁধি তার ঘর’— এ পঙ্ক্তিতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের রহিমউদ্দীন চরিত্রের সাথে প্রতিদান’ কবিতার কবিভাবনার সাদৃশ্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও উদ্দীপক ও ‘প্রতিদান’ কবিতার মূল লক্ষ্য একই।”— বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৭ : বজলু মতিন মণ্ডলের চায়ের দোকানে কাজ করে। একদিন বজলু চায়ের কাপ পরিষ্কার করতে গিয়ে অসতর্কতাবশত দুটি কাপ ভেঙে ফেলে। এতে মতিন মণ্ডল তাকে অনেক মারধর করে। রাতের কাজ শেষে যখন বজলু বাড়ি ফিরবে হঠাৎ সে দোকানের ক্যাশ বাক্সের পাশে কিছু টাকা দেখতে পায়। তার বুঝতে দেরি হয় না যে, দোকানির মালিক টাকা বাক্সে তুলতে ভুলে গেছে। পরদিন কাজে এসে বালু মতিন মণ্ডলকে টাকাগুলো ফেরত দেয়। তখন মতিন মিয়া বজলুকে শাস্তি দেওয়ার জন্য অনুতপ্ত হয় এবং বজলুর বেতন বাড়িয়ে দেয়।
ক. ‘নিরন্তর’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘ফুল করি দান সারাটি জনম-ভর’— পঙক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের সাথে প্রতিদান’ কবিতার সাদৃশ্য আলোচনা করো।
ঘ. “মতিন মণ্ডলের মানসিক পরিবর্তন যেন কবির ভালোবাসাপূর্ণ পৃথিবী নির্মাণের সহায়ক।’- উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ৮ : সাহার বানু একজন স্কুলশিক্ষিকা। তাছাড়া গ্রামের নানা উন্নয়নমূলক কাজের সাথে তিনি যুক্ত। গ্রামের মানুষের বিপদের দিনে তিনি সবসময় পাশে দাঁড়ান। কিন্তু তার প্রতিবেশী আফজাল হোসেন তাঁকে সহ্য করতে পারেন না এবং নানাভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করেন। তবে স্কুলশিক্ষিকা সাহার বানু কখনোই আফজাল হোসেনকে নিজের শত্রু ভাবেন না। বরং তার বিপদের দিনেও সাহার বানু সবার আগে এগিয়ে আসেন।
ক. জসীমউদদীন কী হিসেবে সমধিক পরিচিত?
খ. যে মোরে করিল পথের বিবাগী- পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি – ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের আফজাল চরিত্রের সাথে প্রতিদান কবিতার বৈপরীত্য কোথায়? আলোচনা করো।
ঘ. সাহার বানু যেন কবি ভাবনার প্রতিচ্ছবি’- উক্তিটি যুক্তিসহ বিশ্লেষণ করো।
প্রতিদান কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ৯ : সম্প্রতি আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় আম্পান লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে গেছে রূপপুর গ্রাম। কালাম ও গম্বুর দুজনই এই গ্রামের বাসিন্দা। কিন্তু সীর্ঘদিন ধরেই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত লেগেই আছে। গত কয়েক দিন থেকেই তারা ত্রাণের আশায় ইউনিয়ন পরিষদে খোজখবর করছিল। অবশেষে গফুর ত্রাণের বস্তা পেলেও ঝালাম কোনো ত্রাণ পেল না। বিষয়টি জানতে পেরে গফুর তার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে সো। সে নিজের ত্রাণের কিছু অংশ কালামকে দেয়। এতে তাদের মধ্যে শত্রুতার পরিবর্তে বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরি হয়।
ক. কবি জসীমউদ্দীনের পৈতৃক নিবাস কোথায়?
খ. “আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন।
গ. উদ্দীপকের গফুর চরিত্রটি ‘প্রতিদান’ কবিতার কোন দিকটির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “গফুরের কালামকে সাহায্য করা ‘প্রতিদান’ কবিতার চেতনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।”- উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১০ : উদ্দীপক-১: সন্তানদের পড়ালেখা করানোর জন্য ২৬ বছর চাকরি করে গেছেন। নিজে টাকা জমাননি। পড়ালেখা শেষে সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় পাঠিয়েছেন লন্ডনে। সেখানে উচ্চশিক্ষা শেষে বড়ো ছেলে ডাক্তারি করছে। মেয়েও লন্ডনে ৭ বছর চাকরি করছে। কিন্তু তবুও শেষ বয়সে ঠাই হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমে। নিজের বেদনা ঢেকে বৃদ্ধা মা বলেন, ‘আমি কেমন আছি সেটা দেখার বিষয় না, আমি কেমন আছি এটাও বড়ো ব্যাপার না। আমি সবসময় দোয়া করব আমার সন্তানেরা যেন দুধে-ভাতে থাকে।’
উদ্দীপক-২: প্রাক-ইসলামি যুগে আরবের অবস্থা ছিল শোচনীয়। তখন গোত্রে গোত্রে মারামারি ছিল নিত্য ঘটনা। এক গোত্রের কেউ অন্য গোত্রের কারো দ্বারা আক্রান্ত হলে সেই মারামারি বংশ পরম্পরায় চলে আসত। এখনই সময়ে আবির্ভাব ঘটে মহানবি হজরত মুহম্মদ (সা.) এর। তিনি ক্ষমার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে শান্তির বার্তা পৌঁছে দেন সকলের কাছে। ফলে আরব অঞ্চলে সৃষ্টি হয় প্রীতিময় পরিবেশ।
ক. কবি কোথায় আঘাত পেয়েছেন?
খ. ‘প্রতিদান’ কবিতায় ভালোবাসাপূর্ণ মানুষ কামনা করা হয়েছে কেন?
গ. উদ্দীপক-১ ‘প্রতিদান’ কবিতার সঙ্গে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপক-২ ‘প্রতিদান’ কবিতার মূলভাবকে ধারণ করতে পেরেছে কি? তোমার মতামত দাও।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১১ : কেতুপুর গ্রামের দুলাল মিয়া অত্যন্ত প্রতিশোধপরায়ণ মানুষ। কেউ তার ক্ষতি করলে সে ছেড়ে কথা বলে না। যেভাবেই হোক প্রতিশোধ নেওয়াই তার স্বভাব। যদিও স্ত্রী আয়েশা বানু তার বিপরীত মেরুর মানুষ। সে স্বামীকে সর্বদা বোঝানোর চেষ্টা করে যে, অপরাধীকে ক্ষমা করে তার উপকার করার মধ্যেই মানবজন্মের সার্থকতা।
ক. ‘প্রতিদান’ কবিতাটি কবি জসীমউদ্দীনের কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।
খ. কবি কাঁটার বিনিময়ে ফুল দান করতে চান কেন?
গ. উদ্দীপকের দুলাল মিয়া চরিত্রের মনোভাবের সাথে প্রতিদান’ কবিতার বৈসাদৃশ্য নির্দেশ করো।
ঘ, “উদ্দীপকের আয়েশা বানু ‘প্রতিদান’ কবিতার কবিভাবনার সমর্থক”- উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১২ : “হিংসা-ক্ষ্যে রহিবে না কেহ কারে করিবে না ঘৃণা
পরস্পর বাঁধি দিন প্রীতির কখনে
বিশ্বজুড়ে এক সুরে বাজিবে গো মিলনের বীণা
মানব জাগিবে নয় জীবন স্পন্দনে।”
ক. কবি জসীমউদ্দীনকে ডিলিট উপাধি প্রদান করে কোন বিশ্ববিদ্যালয়?
খ. যে গেছে বুকেতে আঘাত হানিয়া তার লাগি আমি কাঁদি’- কেন? ব্যাখ্যা করো।
গ. ‘প্রতিদান’ কবিতার কোন দিকটি উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের তাৎপর্য ‘প্রতিদান’ কবিতার সামগ্রিক চেতনাকে ধারণ করে কি? বিশ্লেষণ করো।
প্রতিদান কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
সৃজনশীল প্রশ্ন ১৩ : “প্রীতি ও প্রেমের পুণ্য বাঁধনে যবে মিলি পরস্পরে,
স্বর্গ আসিয়া দাঁড়ায় তখন আমাদের কুঁড়েঘরে।”
ক. ‘বিবাগী’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘ভালোবাসাপূর্ণ মানুষই নির্মাণ করতে পারে সুন্দর ও নিরাপদ পৃথিবী – ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকে ‘প্রতিদান’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে?
ঘ. “উদ্দীপকটিতে ‘প্রতিদান’ কবিতার সামগ্রিক ভাব প্রকাশিত হয়নি।”- উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
সৃজনশীল প্রশ্ন ১৪ : কারো উপকার করে খোঁটা দেওয়া একটি বিশ্রী অভ্যাস। এটা মানুষের ব্যক্তিত্বকে ছোটো করে দেয়। দেখা যায়, এক শ্রেণির মানুষ দান-খয়রাত করে এবং ঋণ দিয়ে পরক্ষণেই খোঁটা দেয়। বিশেষত যদি গ্রহীতার সঙ্গে কোনো কারণে সম্পর্ক নষ্ট হয় বা মতপার্থক্য দেখা দেয়, তখন অতীতের উপকারের ফিরিস্তি খুলে দিয়ে খোঁটা দিতে শুরু করে। সমাজে এটি একটি গর্হিত কাজ।
ক. ‘নিঠুরিয়া’ শব্দের অর্থ কী?
খ. “কত ঠাঁই হতে কত কী যে আনি, সাজাই নিরন্তর”- ব্যাখ্যা করো।
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘প্রতিদান’ কবিতার সাদৃশ্য ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উদ্দীপকের বিষয়বস্তু ও ‘প্রতিদান’ কবিতার কবির মনোভাব পরস্পর সমান্তরাল”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।
কঠিন অংশের ব্যাখ্যা
১. আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা আমি বাঁধি তার ঘর,
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
প্রতিদান কবিতায় কবি ক্ষুদ্র স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে পরার্থপরতার মধ্যেই যে ব্যক্তির প্রকৃত সুখ ও জীবনের সার্থকতা নিহিত সেই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। আর তাই কবি প্রতিহিংসাপরায়ণ না হয়ে তাঁর সাজানো ঘর যে ভেঙেছে তার ঘর পরম মমতায় গড়ে দিতে চান। আবার যে কবিকে পর করে দিয়েছে কবি তাকেই আপন করে নিতে আকুল হয়েছেন। কেননা, তিনি ভালোবাসা দিয়ে সমাজে বিদ্যমান হিংসা-বিভেদ-হানাহানির ইতি টানতে চান।
২. যে মোরে করিল পথের বিবাগী—
পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি,
কবি প্রতিশোধ-প্রতিহিংসার বিপরীতে ভালোবাসাপূর্ণ পৃথিবীর প্রত্যাশা করেন। ফলে কবি যার কারণে পথের বিবাগী হয়েছেন তার জন্যই পথে পথে ঘুরছেন। কেননা, কবি তাঁর অনিষ্টকারীর কোনো ক্ষতি চান না, উপরন্তু তাকে ভালোবাসা দিয়ে ঘরে ফেরাতে চান।
৩. আমার এ কূল ভাঙিয়াছে যেবা আমি তার কূল বাঁধি,
যে গেছে বুকেতে আঘাত হানিয়া তার লাগি আমি কাঁদি।
সমাজে বিদ্যমান বিভেদ-হিংসা-হানাহানি দ্বারা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও কবির কণ্ঠে প্রতিশোধ-প্রতিহিংসার বিপরীতে ব্যক্ত হয়েছে। প্রীতিময় পরিবেশ সৃষ্টির আকাঙ্ক্ষা। কবির কূল ভেঙেছে যে তার জন্যই কবি কূল বেঁধে দিচ্ছেন। আবার যে কবির বুকে আঘাত করেছে তার মঙ্গলের জন্যই তিনি কাঁদেন। কবি তাঁর অনিষ্টকারীকে কেবল ক্ষমা করেই নয়, বরং প্রতিদান হিসেবে তার উপকার করার মাধ্যমে পৃথিবীকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করতে চেয়েছেন।
৪. যে মোরে দিয়েছে বিষে-ভরা বাণ,
আমি দেই তারে বুকভরা গান;
কবিকে যে কটু কথা বলেছে বা তাঁর প্রতি হিংসাত্মক ভাষা ব্যবহার করেছে তাকে কবি বুকভরা গান দিয়ে সমাদর করতে চেয়েছেন। কবি বিরূপ ব্যবহারের বিনিময়ে সুন্দর কথা বলে সেই ব্যক্তির ভুল ভাঙতে প্রত্যয়ী। কারণ তিনি মনে করেন প্রীতিপূর্ণ আচরণ পারে সুন্দর সমাজ গড়তে।
৫. মোর বুকে যেবা কবর বেঁধেছে আমি তার বুক ভরি
রঙিন ফুলের সোহাগ-জড়ানো ফুল মালঞ্চ ধরি।
কবিকে যে নিঃস্ব করেছে কবি তার বুক ভালোবাসায় পরিপূর্ণ করে দিতে চান। এজন্য তিনি তাঁর অনিষ্টকারীর জীবন নানা রঙিন ফুলের বাগান দিয়ে সাজাতে চান। কেননা তাঁর মতে, ভালোবাসাপূর্ণ মানুষই পারে সুন্দর, নিরাপদ ও বাসযোগ্য পৃথিবী নির্মাণ করতে।
সারকথা : একজন প্রকৃত মানুষের বৈশিষ্ট্য উদ্দীপকে প্রকাশ পেয়েছে। উদ্দীপকের কবি এমন মানুষকেই প্রকৃত মানুষ বলেছেন অন্যের জন্য যার প্রাণ কাঁদে। কবির আকাঙ্ক্ষিত এমন মানুষই ‘প্রতিদান’ কবিতার কবি।
No comments