কারবালা প্রান্তর সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

কারবালা-প্রান্তর : সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

কারবালা প্রান্তর সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর এই পোস্টে দেওয়া হয়েছে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা ১ম পত্রের একটি গল্প হচ্ছে কারবালা প্রান্তর। এই গল্পটি মীর মশাররফ হোসেন লিখেছে। এই পোস্টে আপনাদের সাথে কারবালা প্রানত্র গল্পের গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো শেয়ার করেছি। অনেক শিক্ষার্থীরা এই প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান করে।

তাই আজকের পোস্টে সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর গুলো সংগ্রহ করে দিয়েছে। নিচে উত্তর গুলো পীদীএফ ফাইলে দেওয়া আছে। তো এজন্য আজকের পোস্ট টী সম্পূর্ণও পড়ুন। কারবালা প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সংগ্রহ করুণ। তো যাদের যাদের সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর গুলো প্রয়োজন তারা নিচে থেকে সংগ্রহ করেনিন।

কারবালা প্রান্তর সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

এখানে কারবালা প্রান্তর সৃজনশীল প্রশ্ন গুলো দেওয়া আছে। এই সৃজনশীল গুলো পরীক্ষার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়েছে। এগুলো অনুশীলন করার মাধ্যমে পরীক্ষার জন্য প্রশ্ন কমন পড়তে পারে। তাই প্রশ্ন গুলো ভালো ভাবে অনুশীলন করবেন। নিচে থেকে সৃজনশীল গুলো দেখেনিন।

উদ্দীপক- মোঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর অল্প বয়সেই মধ্য এশিয়ার সমরখন্দের সিংহাসনে আরোহণ করেন। ভারতের ইব্রাহীম লোদীকে পরাজিত করে দিল্লির সিংহাসনে বসেন। আবার মেবারের রাজা সংগ্রাম সিংহকে পরাজিত করে ভারতবর্ষে বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন

উদ্দীপক- বাবরের ভারত সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা মেনে নিতে পারেনি রাজপুতগণ। তাই তরুণ বীর রণবীর চৌহান বাবরকে হত্যার উদ্দেশ্যে দিল্লির পথে পথে ঘুরতে থাকে; ঘটনাক্রমে পেয়েও যায়। বাবরের এক মহত্টের ঘটনায় চৌহান মুগ্ধ হয় এবং অপরাধ স্বীকার করে শাস্তি প্রার্থনা করে সমস্ত ঘটনা জেনে বাবর তাকে বুকে টেনে নেন এবং দেহরক্ষী নিযুক্ত করেন।

. ইমাম হোসেনকে অস্ত্রহীন দেখে কে অনবরত অশ্রু বিসর্জন করেছিল?
. “ইহজীবনেও আর পানি পান করিব না’_ ইমাম হোসেনের এই প্রতিজ্ঞার কারণ বুঝিয়ে লেখ।
. উদ্দীপক- অংশে ইমাম হোসেন চরিত্রের যে বিশেষ দিকটির প্রতিফলন লক্ষণীয় তা ব্যাখ্যা কর।
. প্রেক্ষাপট ভিন্ন হলেও সম্রাট বাবর ইমাম হোসেন যেন একই বৃন্তে দুটি কুসুম’_ মন্তব্যের সপক্ষে যুক্তি দাও।

কারবালা প্রবন্ধ

ইমাম হোসেনের অশ্বের পদধ্বনি শ্রবণ করিয়া এজিদের সৈন্যগণ চমকিত হইল। সকলের অন্তর কাপিয়া উঠিল। সকলেই দেখিতে লাগিল, হোসেন স্বয়ং যুদ্ধক্ষেত্রে আসিতেছেন। দেখিতে দেখিতে চক্ষের পলকে মহাবীর হোসেন যুদ্ধক্ষেত্রে আসিয়া উচ্চঃস্বরে বলিতে লাগিলেন, “ওরে পাপাত্মা এজিদ! তুই কোথায়? তুই নিজে দামেস্কে থাকিয়া নিরীহ সৈন্যদিগকে কেন রণস্থলে পাঠাইয়াছিস? আজ তোকে পাইলে জ্ঞাতিবধবেদনা, ভ্রাতৃপুত্র কাসেমের বিচ্ছেদবেদনা এবং স্বীয় পুত্রগণের বিয়োগবেদনা, সমস্তই আজ তোর পাপশোণিতে শীতল করিতাম। ওরে অর্থলোভী পিশাচেরা, ধর্মভয় বিসর্জন দিয়া আমার বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করিয়াছিস! আয় দেখি, কে সাহস করিয়া আমার অস্ত্রের সম্মুখে আসিবি, আয়! আর বিলম্ব কেন?

এজিদপক্ষীয় সর্বশ্রেষ্ঠ যোদ্ধা আবদুর রহমান; হোসেনের সহিত যুদ্ধ করিতে তাহার চিরসাধ অশ্বপৃষ্ঠে আরোহন করিয়া সেই আবদুর রহমান অসি চালনা করিতে করিতে হোসেনের সম্মুখে আসিয়া বলিতে লাগিল, “হোসেন। তুমি আজ শোকে তাপে মহা কাতর; বোধহয়, আজ দশ দিন তোমার পেটে অন্ন নাই; পিপাসায় কণ্ঠতালু বিশুষ্ক; এই কয়েকদিন কেন বাচিয়া আছ বলিতে পারি না। আর কষ্ট ভোগ করিতে হইবে না, শীঘ্রই তোমার মনের দুঃখ নিবারণ করিতেছি। বড় দর্পে অশ্বচালনা করিয়া বেড়াইতেছ; এই আবদুর রহমান তোমার সন্মুখে দাঁড়াইল, যত বল থাকে, অগ্রে তুমি আমাকে আঘাত কর। তোমার বল বুঝিয়া দেখি; যদি আমার অস্ত্রাঘাত সহ্য করিবার উপযুক্ত হও, আমি প্রতিঘাত করিব; নতুবা ফিরিয়া যাইয়া তোমার ন্যায় হীন, ক্ষীণ, দুর্বল যোদ্ধাকে খুঁজিয়া তোমার সহিত যুদ্ধ করিবার জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠাইয়া দিব।

1

লেখকঃ মীর মশাররফ হোসেন
হোসেন বলিলেন, “এত কথার প্রয়ােজন নাই! আমার বংশমধ্যে কিংবা জ্ঞাতিমধ্যে অগ্রে অস্ত্র নিক্ষেপের রীতি থাকিলে তুমি এত কথা কহিবার সময় পাইতে না। অস্ত্রই বল পরীক্ষার প্রধান উপকরণ! কেন বিলম্ব
করিতেছিস? যে কোনো অস্ত্র হউক, একবার নিক্ষেপ করিলেই তোর যুদ্ধসাধ মিটাইতেছি। বিলম্বে তোর মঙ্গল বটে, কিন্তু আমার অসহ্য।

হোসেনের মস্তক লক্ষ্য করিয়া তরবারি উত্তোলনপূর্বকতোমার মস্তকের মূল্য লক্ষ টাকা!” এই বলিয়া আবদুর রহমান ভীম তরবারি আঘাত করিল। হোসেনের বর্মোপরি আবদুর রহমানের তরবারিসংলগ্ন হইয়া অগ্নিস্ফুলিঙ্গ

2

বহির্গত হইল। রহমান লজ্জিত হইয়া পলায়নের উপক্রম করিল হোসেন বলিলেন, “অগ্রে সহ্য কর, শেষে পলায়ন করিস।কেহই আর হোসেনের সম্মুখীন হইতে সাহস করিল না বলিতে লাগিল, “যদি হোসেন আজ সময় পিপাসা নিবারণ করিতে বিন্দুমাত্রও জল পায়, তাহা হইলে আমাদের একটি প্রাণীও ইহার হস্ত হইতে প্রাণ বাঁচাইতে পারিবে না। যুদ্ধ যতই হউক, বিশেষ সতর্ক হইয়া দ্বিগুণ সৈন্য দ্বারা ফোরাতল এখন ঘিরিয়া রাখাই কর্তব্য। যে মহাবীর এক আঘাতে আবদুর রহমানকে নিপাতিত করিল, তাঁহার সম্মুখে কে সাহস করিয়া দাঁড়াইবে? আমরা রহমানের গৌরবেই চিরকাল গৌরব করিয়া বেড়াই, তাহারই যখন দশা হইল, তখন আমরা তো হোসেনের অশ্বপদাঘাতেই গলিয়া যাইব।পরস্পর এইরূপ বলাবলি করিয়া সকলেই একমতে দ্বিগুণ সৈন্য দ্বারা বিশেষ সুদৃঢ়রূপে ফোরাতকূল বন্ধ করিল।

হোসেন অনেকক্ষণ পর্যন্ত সমরাঙ্গনে কাহাকেও না পাইয়া শত্রুশিবিরাভিমুখে অশ্বচালনা করিলেন। তদ্দর্শনে অনেকেরই প্রাণ উড়িয়া গেল। কেহ অশ্বপদাঘাতে নরকে গমন করিল, কেহ কেহ সাহসের উপর নির্ভর করিয়া হোসেনের সম্মুখে সশস্ত্র হইয়া দাঁড়াইল।

3

অবশিষ্ট সৈন্যগণ কারবালা পার্শ্বস্থ বিজন বনমধ্যে পালাইয়া প্রণরক্ষা করিল। ওমর, সীমার, আবদুল্লাহ জেয়াদ প্রভৃতি সকলেই হোসেনের ভয়ে বনমধ্যে লুকাইলেন।

শত্রুপক্ষের শিবিরস্থ সৈন্য একেবারে নিঃশেষিত করিয়া হোসেন ফোরাতকূলের দিকে অশ্ব চালাইলেন। ফোরাতরক্ষীরা হঠাৎ পলাইল না, কিন্তু অতি অল্পক্ষণ হোসেনের অসির আঘাত সহ্য করিয়া আর তিষ্ঠিবার সাধ্য হইল না যে এজিদের সৈন্যকোলাহলে প্রচণ্ড কারবালা প্রান্তর, সুপ্রশস্থ ফোরাতকল ঘন ঘন বিকম্পিত হইত; এক্ষণে হোসেনের অস্ত্রাঘাতে সেই কারবালা একেবারে জনশূন্য নীরব প্রান্তর; শীঘ্র শীঘ্র ফোরাতকূলে যাইয়া অশ্ব হইতে অবতরণপূর্বক একেবারে জলে নামিলেন। জলের পরিষ্কার স্নিগ্ধ ভাব দেখিয়া ইচ্ছা করিলেন যে, এককালে নদীর সমুদয় জল পান করিয়া ফেলেন।

শেষ কথা

আশা করছি এই পোস্ট টি আপনাদের অনেক ভাললেগেছে। এই পোস্ট টি ভালোলেগে থাকলে শেয়ার করতে পারেন। আশা করছি এই পোস্ট থেকেকারবালা প্রান্তর সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সংগ্রহ করতে পেরেছেন।  এই রকম আরও ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকবেন।  ভালোথাকবেন, সুস্থ থাকবেন।   আমাদের সাথে শেষ পর্যন্ত থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

No comments

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.