HSC ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায়-০৯
এইচএসসি পরীক্ষার
পূর্ণাঙ্গ
প্রস্তুতি
HSC Business Organization and
Management 2nd Paper Srijonshil question and answer
ব্যবসায় সংগঠন
ও
ব্যবস্থাপনা
২য় পত্র
অধ্যায়-০৯ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
HSC Business Organization and
Management 2nd Paper
Srijonshil Question and Answer
পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, এ অধ্যায়ে বোর্ড পরীক্ষা, শীর্ষস্থানীয় কলেজসমূহের নির্বাচনি পরীক্ষা এবং বাছাইকৃত এক্সক্লুসিভ মডেল টেস্টের প্রশ্নগুলোর পূর্ণাঙ্গ উত্তর দেওয়া হয়েছে। এগুলো অনুশীলন করলে তোমরা এ অধ্যায় থেকে যেকোনো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০১
সিলভার এন্টারপ্রাইজ-এর কর্ণধার মি. হাবিব। তিনি বেশি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজে নেন এবং অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থাপনার নিচের স্তরে দেন। আবার প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরের কর্মীর কার্যসম্পাদনে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য তিনি একে অন্যের সাথে যোগাযোগ রাখতে উৎসাহিত করেন। ফলে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ হয়। [ঢা. বো., কু. বো. ১৭]
ক. লক্ষ্য কী? ১
খ. সমন্বয় কেন প্রয়োজন? ২
গ. উদ্দীপকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যবস্থাপনার কোন নীতি অনুসৃত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. সুষ্ঠু সমন্বয় ব্যবস্থা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখে- উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
কোনো কাজের প্রত্যাশিত ফলাফলই হলো লক্ষ্য।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
সমন্বয় হলো প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে দলীয় প্রচেষ্টা, ঐক্য ও শৃঙ্খলা বিধানের প্রক্রিয়া।
প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও বিভাগের কাজের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ কর্মপ্রচেষ্টা জোরদার হলে কাজে ভারসাম্য সৃষ্টি হয়। সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক কাজে গতিশীলতা ছাড়াও কর্মীদের মনোবল উন্নয়ন সম্ভব হয়। ফলে মূল লক্ষ্য অর্জন সহজ হয়। এজন্যই প্রতিষ্ঠানে সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যবস্থাপনার কেন্দ্রীকরণ (Centralization) ও বিকেন্দ্রীকরণ (Decentralization) নীতি অনুসৃত হয়েছে।
কেন্দ্রীকরণ বলতে উচ্চ স্তরের ব্যবস্থাপনার হাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে রাখাকে বোঝায়। অন্যদিকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা শুধু উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনার হাতে না রেখে বিভিন্ন স্তরের ব্যবস্থাপকদের ওপর দেওয়াকে বলা হয় বিকেন্দ্রীকরণ। কেন্দ্রীকরণের ফলে প্রতিষ্ঠানের অধস্তন কর্মীদের গুরুত্ব হ্রাস পায়; কিন্তু বিকেন্দ্রীকরণে বৃদ্ধি পায়।
উদ্দীপকের সিলভার এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মি. হাবিব। তিনি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিজে গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে তিনি অন্যদের কোনো সুযোগ প্রদান করেন না। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীকরণ নীতি ফুটে ওঠে। আবার তিনি প্রতিষ্ঠানের অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নিচের স্তরের ব্যবস্থাপকদের হাতে দেন। এর মাধ্যমে নিচের স্তরের ব্যবস্থাপকরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রাখতে পারছে। ফলে প্রতিষ্ঠাটিতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নীতি ফুটে ওঠেছে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে কেন্দ্রীকরণ ও বিকেন্দ্রীকরণ উভয় নীতি অনুসৃত হয়েছে।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
‘সুষ্ঠু সমন্বয় ব্যবস্থা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখে’- উদ্দীপকের আলোকে বক্তব্যটি যৌক্তিক।
একটি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগ এক সাথে কাজ করে। এক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যক্তি ও বিভাগ যদি নিজেদের ইচ্ছামতো কাজ করে তাহলে প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। ফলে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জন কঠিন হয়ে পড়ে। এজন্য বিভাগগুলোর কাজের মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয় প্রয়োজন।
উদ্দীপকের সিলভার এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মি. হাবিব। তিনি প্রতিষ্ঠানের এক বিভাগের সাথে অন্য বিভাগের কাজের যোগসূত্র স্থাপন করে দেন। প্রত্যেক কর্মী যাতে সুষ্ঠুভাবে কার্যসম্পাদন করতে পারেন সেজন্য তিনি এ ধরনের সমন্বয়ের ব্যবস্থা করে দেন।
মি. হাবিবের উক্ত পদক্ষেপে প্রতিটি বিভাগের কার্যক্রম সমান তালে এগিয়ে যায়। প্রত্যেকটি বিভাগ একটি অপরটির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় সব বিভাগই যোগাযোগের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের চেষ্টা করে। এতে প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য অর্জন সহজ হয়। তাই বলা যায়, প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য দলীয় প্রচেষ্টা ও সব কাজের মধ্যে সমন্বয়সাধন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০২
মি. রাতুল তার প্রতিষ্ঠানের কাজগুলোকে বিভাগ অনুযায়ী ভাগ করেছেন। তবে বিভাগের যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তার হাতে রেখে দিয়েছেন। এতে বিভাগীয় ব্যবস্থাপকরা কোনো সিদ্ধান্ত স্বাধীনভাবে নিতে পারেন না। এদিকে প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের চেয়ে তার বিক্রয় কমে যাওয়ায় তিনি নতুন করে পরিকল্পনা করার চিন্তা করছেন।
[দি. বো. ১৭]
ক. উলম্ব যোগাযোগ কী? ১
খ. ব্যবস্থাপনার উচ্চ স্তরটি ব্যাখ্যা করো। ২
গ. সমন্বয়ের কোন নীতির ব্যত্যয় ঘটায় মি. রাতুলের প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় হ্রাস পেয়েছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. মি. রাতুলের নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমন্বয়ের কোন শর্তটি থাকা আবশ্যক? তোমার মতামত দাও। ৪
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রতিষ্ঠানের উচ্চস্তর ও নিæস্তরের ব্যক্তিবর্গের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান হলে তাকে উলম্ব যোগাযোগ বলে। যেমন: পরিচালনা পর্ষদের সাথে উৎপাদন ব্যবস্থাপকের যোগাযোগ।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনার যে স্তরে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও কৌশল নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারণ করা হয় তাকে উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনা বলে।
প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, পরিচালনা পর্ষদ, কোম্পানির সচিব, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ উচ্চ স্তরের আওতাভুক্ত। এ স্তরের কর্মকর্তাগণ প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও নীতি নির্ধারণ, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কৌশল গ্রহণ করেন। এসব কাজে অধিক মাত্রায় চিন্তা-চেতনার প্রয়োজন। তাই বলা হয়, উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকগণ চিন্তাশীল কাজের সাথে জড়িত থাকেন।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
সমন্বয়ের দলীয় সমঝোতার নীতির ব্যত্যয় ঘটায় মি. রাতুলের প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় হ্রাস পেয়েছে।
দলীয় সমঝোতার নীতি অনুযায়ী প্রতিটি ব্যক্তি, দল ও উপ-দল, বিভাগ ও উপ-বিভাগ পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে। এভাবে দলীয় প্রচেষ্টাকে সমন্বিত করা গেলে প্রতিষ্ঠানের কাজে গতি বাড়ে। এতে যেকোনো সিদ্ধান্ত সহজেই বাস্তবায়ন করা যায়।
উদ্দীপকে দেখা যায়, মি. রাতুল তার প্রতিষ্ঠানের কাজগুলোকে বিভাগ (যেমন: ক্রয়, বিক্রয়, হিসাব ও উৎপাদন বিভাগ) অনুযায়ী ভাগ করেছেন। কিন্তু প্রতিটি বিভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তিনি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। ফলে বিভাগীয় ব্যবস্থাপকরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তাই বিভাগসমূহের মধ্যে দলীয় প্রচেষ্টাও জোরদার হয় না। তাই বলা যায়, দলীয় সমঝোতার নীতির ব্যত্যয় ঘটায় উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় কমেছে।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
মি. রাতুলের নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয়ের শর্তটি থাকা আবশ্যক।
এর মাধ্যমে কর্মীরা নিজ থেকেই বিভিন্ন বিভাগের কাজের সমন্বয়সাধন করে। প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের সমন্বয় গড়ে উঠলে কর্মীরা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে কাজ সম্পাদন করে। যেমন: উৎপাদন ব্যবস্থাপক সরাসরি বিক্রয় ব্যবস্থাপকের কাছ থেকে বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা জানবেন এবং সে অনুযায়ী উৎপাদন করবেন। এতে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জন সহজ হবে।
উদ্দীপকের মি. রাতুল তার প্রতিষ্ঠানের কাজগুলোকে বিভিন্নভাবে (ক্রয়, বিক্রয়, হিসাব ও উৎপাদন বিভাগ) ভাগ করেন। কিন্তু প্রতিটি বিভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নিজের কাছে রেখেছেন। এতে বিভাগগুলোর কাজের মধ্যে সমন্বয় রাখা যায়নি। ফলে ঠিক সময়ে কার্যসম্পন্ন হচ্ছে না। এতে প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের চেয়ে তার বিক্রয় কমে গেছে। যার ফলশ্রুতিতে মি. রাতুল প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন পরিকল্পনা নেওয়ার চিন্তা করছেন।
মি. রাতুলের নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয় প্রয়োজন। কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা গেলে সব বিভাগের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠবে। এতে প্রতিটি বিভাগের কর্মীরা স্বপ্রণোদিত হয়ে সমান তালে কার্যসম্পাদন করবে। ফলে বিভাগগুলোর কাজের মধ্যে সুশৃঙ্খলা বজায় থাকবে, যা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে। তাই বলা যায়, মি. রাতুলের নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৩
জনাব দুলাল মিয়া মধুমতি টেক্সটাইল মিলের প্রধান নির্বাহী। প্রতিষ্ঠানটির একটি বিভাগের কাজের সাথে অন্য বিভাগের কাজ সম্পর্কযুক্ত। মানবসম্পদ বিভাগ এটি বিবেচনা না করে কর্মীদের গণবদলি করে। এতে বিভিন্ন বিভাগে কর্মী সংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। ফলে দক্ষ ও অদক্ষ কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। কয়েক মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন হ্রাস পায়। [কু. বো. ১৭]
ক. উদ্দেশ্যের ঐক্য কী? ১
খ. দলীয় সমঝোতার নীতি কীভাবে সমন্বয়কে সহায়তা করে? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. মধুমতি টেক্সটাইলে কর্মী বদলির ক্ষেত্রে সমন্বয়ের কোন নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. সুষ্ঠু সমন্বিত ব্যবস্থার অভাবই মধুমতি টেক্সটাইলের উৎপাদনের অন্তরায়- উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
সঠিক সমন্বয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হলে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক কর্মী, বিভাগ ও উপবিভাগের উদ্দেশ্যের মধ্যে মিল থাকতে হয়, এ আদর্শকে উদ্দেশ্যের ঐক্য নীতি বলা হয়।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রতিষ্ঠানের সব বিভাগ, উপবিভাগ ও ব্যক্তির মধ্যে সুসস্পর্ক এবং সহযোগিতার মাধ্যমে মিলেমিশে চলার নীতিকে সমঝোতার নীতি বলে।
যেকোনো দলবদ্ধ কাজে সমঝোতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কর্মীদের পারস্পরিক সমঝোতার ফলে কাজে গতি বাড়ে। এতে দলীয় প্রচেষ্টা সার্থক হয় এবং কাজে শৃঙ্খলা বজায় থাকে। ফলে প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু সমন্বয় ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। এভাবে দলীয় সমঝোতার নীতি সমন্বয়কে সহায়তা করে।
সমন্বয়: কোনো প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য এর বিভিন্ন বিভাগ, উপবিভাগ ও ব্যক্তিক প্রচেষ্টাকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রক্রিয়াকে সমন্বয় বলে।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
মধুমতি টেক্সটাইলে কর্মী বদলির ক্ষেত্রে ভারসাম্যের নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে।
ভারসাম্যের নীতি বলতে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগের কাজের মধ্যে সমতা বিধানের আদর্শকে বোঝায়। প্রতিটি বিভাগ ও উপবিভাগের কাজে যদি ভারসাম্য স্থাপন করা যায় তবে সমন্বয় অনেক সহজ হয়। এতে সব বিভাগের কাজ সমান তালে এগিয়ে নেওয়া যায়।
উদ্দীপকের জনাব দুলাল মিয়া মধুমতি টেক্সটাইল মিলের একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। প্রতিষ্ঠানটির একটি বিভাগের কাজের সাথে অন্য বিভাগের কাজ সম্পর্কযুক্ত। কোনো বিভাগের কাজে বিঘ্ন ঘটলে তার প্রভাব অন্য সব বিভাগের ওপর পড়ে । এটি বিবেচনা না করেই উক্ত প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগ কর্মীদের গণবদলি করে। এতে বিভিন্ন বিভাগে কর্মীসংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। কোনো বিভাগে কাজের তুলনায় কর্মীসংখ্যা বেশি। আবার কোনো বিভাগে কাজের তুলনায় কর্মীসংখ্যা কম। ফলে সব বিভাগের কাজ ভারসাম্যপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় না। তাই বলা যায়, মধুমতি টেক্সটাইল মিলে কর্মী বদলিতে সমন্বয়ের ভারসাম্যের নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
সুষ্ঠু সমন্বিত ব্যবস্থার অভাবই মধুমতি টেক্সটাইলের উৎপাদনের অন্তরায়-বক্তব্যটি যৌক্তিক।
সমন্বয় বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগের কাজকে একসূত্রে গ্রথিত করে। একটি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগ কাজ করে। এজন্য সব বিভাগের কাজের মধ্যে সমন্বয় থাকা আবশ্যক। সুষ্ঠু সমন্বয়ের ব্যবস্থা থাকলে প্রতিষ্ঠানের কাজ ঠিক সময়ে সম্পন্ন করা যায়। এতে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জন সহজ হয়।
উদ্দীপকে মধুমতি টেক্সটাইল মিলের মানবসম্পদ বিভাগ কোনো রকম বিচার বিবেচনা ছাড়াই বিভিন্ন বিভাগ থেকে কর্মীদের গণবদলি করে। এতে বিভাগগুলোর কর্মীসংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। ফলে সমন্বয়ের অভাবে উক্ত প্রতিষ্ঠানে কয়েক মাসের মধ্যে উৎপাদন হ্রাস পায়।
কিন্তু মানবসম্পদ বিভাগ যদি কর্মী বদলির ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিভাগের প্রয়োজন ও বাস্তবতা নিশ্চিত করতো তাহলে এমনটি হতো না। কারণ গণবদলির ফলে বিভাগগুলোতে কর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম বা বেশি হয়েছে। এতে বিভাগসমূহের কাজের মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় হচ্ছে না। ফলে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের পরিমাণ কমে যায়। তাই বলা যায়, সুষ্ঠু সমন্বিত ব্যবস্থার অভাবে মধুমতি টেক্সটাইলের উৎপাদনের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৪
জনাব সাকিলের সংগঠন কাঠামোতে দেখা যায় একটি বিভাগে কর্মীর সংখ্যা কম হওয়ায় ঐ বিভাগের কর্মীরা কর্মভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। আবার অন্য একটি বিভাগে কর্মীর সংখ্যা বেশি থাকায় তারা দ্রুত কাজ শেষ করে অলস সময় কাটাচ্ছে। এতে প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য জনাব সাকিল জনবল পুনঃবিন্যাস করেছেন। পরবর্তীতে প্রতিটি বিভাগ যেন নিজ থেকেই অন্য সব বিভাগের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে তার ব্যবস্থাও করেন। [চ. বো. ১৭]
ক. ক্ষুদে বার্তা (SMS) কী? ১
খ. ‘সাম্যের নীতি’ বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে জনাব সাকিলের সংগঠনে সমন্বয়ের কোন নীতির অভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে পরবর্তীতে সমন্বয়ের যে নীতির কথা বলা হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনে তার ভূমিকা বিশ্লেষণ করো। ৪
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
SMS-এর পূর্ণরূপ হলো Short Message Service বা ক্ষুদে বার্তা। ক্ষুদে বার্তা বলতে মুঠোফোন ব্যবহার করে অন্য ফোনে মুহূর্তের মধ্যে সরবরাহকৃত লিখিত সংক্ষিপ্ত বার্তাকে বোঝায়।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
কোনো প্রতিষ্ঠানের সব কর্মীর প্রতি সমান আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শনের নীতিকেই ব্যবস্থাপনার সাম্যের নীতি বলে।
এ নীতি ন্যায়পরায়ণতার সাথে সম্পৃক্ত। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পক্ষপাতিত্ব না করে অধস্তনদের সমান চোখে দেখেন। ফলে প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন ও অধস্তন কর্মকর্তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের জনাব সাকিলের সংগঠনে সমন্বয়ের ভারসাম্যের নীতির অভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল।
প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগের কাজে সমতা বিধানের আদর্শই হলো ভারসাম্যের নীতি। একটি প্রতিষ্ঠানের সব বিভাগ ও উপবিভাগের কাজে যদি ভারসাম্য স্থাপন করা যায় তবে সমন্বয় অনেক সহজ হয়। এতে কেউ যাতে বেশি কর্মভারাক্রান্ত না হয়ে পড়ে সেদিকে লক্ষ রাখা হয়।
উদ্দীপকের জনাব সাকিলের সংগঠন কাঠামোতে বিভিন্ন বিভাগের কাজ ও কর্মীর মধ্যে মিল নেই। উক্ত প্রতিষ্ঠানের কোনো বিভাগে কর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম হওয়ায় ঐ বিভাগের কর্মীরা কর্মভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। আবার অন্য বিভাগে কর্মীর সংখ্যা বেশি থাকায় তারা দ্রুত কাজ শেষ করে অলস সময় কাটাচ্ছে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটির বিভাগগুলোর কাজের মধ্যে কোনো ভারসাম্য নেই। তাই বলা যায়, জনাব সাকিলের প্রতিষ্ঠানে ভারসাম্যের নীতি অনুসরণ না করায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে পরবর্তীতে স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয়ের নীতির কথা বলা হয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
এতে কর্মীরা নিজ থেকেই বিভিন্ন বিভাগের কাজের সাথে সমন্বয়সাধন করে। এ ধরনের সমন্বয় গড়ে ওঠলে কর্মীরা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে কাজ করে। যেমন: উৎপাদন ব্যবস্থাপক সরাসরি বিক্রয় ব্যবস্থাপকের কাছ থেকে বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা জানবেন এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করবেন। এতে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জন সহজ হবে।
উদ্দীপকের জনাব সাকিলের প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের কাজের মধ্যে ভারসাম্যের অভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তাই তিনি তার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগের জনবল পুনঃবিন্যাস করেছেন। এছাড়া প্রতিটি বিভাগ যেন নিজ থেকেই অন্য সব বিভাগের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করে তার ব্যবস্থা করেছেন।
জনাব সাকিলের উক্ত পদক্ষেপে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজে নিয়োজিত হবে। প্রতিটি বিভাগ নিজ থেকেই দায়িত্ব নিয়ে কাজ করবে। সব বিভাগ একে অপরের সাথে সমন্বয় করে সমানভাবে কাজ সম্পন্ন করবে। এতে সঠিকভাবে ও ঠিক সময়ে কাজ সম্পন্ন হবে। তাই বলা যায়, জনাব সাকিল যে স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয় ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন তা প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৫
জনাব মনির একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি নতুন কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পূর্বে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করেন। এ লক্ষ্যে তিনি সকল বিভাগের পরিচালকদের নিয়ে সকাল ১০টায় একটি সভার আয়োজন করার জন্য সেক্রেটারিকে জানান। সভায় প্রতিটি বিভাগের মধ্যে সমানভাবে কাজ ভাগ করে দেওয়া হয় এবং কার্যসম্পাদন সূচিও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। [সি. বো. ১৭]
ক. টেলিকনফারেন্সিং কী? ১
খ. ‘ফলাবর্তন যোগাযোগ প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান’- ব্যাখ্যা করো। ২
গ. সভা আয়োজনের জন্য সেক্রেটারিকে জানানো- ব্যবস্থাপনার কোন কাজের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানে সমন্বয়ের এক বা একাধিক নীতি অনুসৃত হয়েছে- তুমি কি একমত? যুক্তিসহ মূল্যায়ন করো। ১
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
কোনো সভায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিবর্গ ভৌগোলিকভাবে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবস্থান করা সত্তে¡ও যে ব্যবস্থায় টেলিফোন সংযোগের মাধ্যমে সভা ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তাকে টেলিকনফারেন্স বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ফলাবর্তন বলতে প্রেরকের সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাপকের প্রদত্ত প্রত্যুত্তর বা মনোভাব প্রকাশকে বোঝায়।
ফলাবর্তনের মাধ্যমে প্রাপকের কাছে তথ্যের বা সংবাদের বিষয়বস্তু স্পষ্ট হচ্ছে কি না তা জানা যায়। এতে প্রেরক প্রাপকের মনোভাব বা উত্তর জানতে পারে। প্রয়োজনে একাধিকবার উত্তর-প্রত্যুত্তরের মধ্য দিয়ে যোগাযোগের উদ্দেশ্য অর্জিত হয়।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
সভা আয়োজনের জন্য সেক্রেটারিকে জানানো ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা কাজের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করে।
নির্দেশনা বলতে যে প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থাপক কর্মীকে কোন কাজ, কখন, কীভাবে সম্পন্ন করবে সে সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করাকে বোঝায়। পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনার প্রয়োজন হয়।
উদ্দীপকের জনাব মনির একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি নতুন কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পূর্বে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করেন। তার এ কাজটি ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা কাজের সাথে সম্পৃক্ত। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে ব্যবস্থাপনার যে কাজের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে তা নির্দেশনার অন্তর্ভুক্ত।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে বর্ণিত প্রতিষ্ঠানে সমন্বয়ের একাধিক নীতি অনুসৃত হয়েছে- আমি এর সাথে একমত পোষণ করি।
সমন্বয় বলতে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগের প্রচেষ্টাকে একসাথে গ্রথিত, সংযুক্ত ও সুসংহত করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়।
উদ্দীপকের জনাব মনির একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি প্রতিষ্ঠানে নতুন কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য সর্বপ্রথম সকল বিভাগের পরিচালকদের অবগত করেন। যে কাজটি সমন্বয়ের প্রারম্ভে শুরুর নীতির সাথে সম্পৃক্ত।
উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানের সভায় প্রতিটি বিভাগের মধ্যে সমানভাবে কাজ ভাগ করে দেওয়া হয় এবং কার্যসম্পাদন সূচি ও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। যেটি সমন্বয়ের ভারসাম্যের নীতির সাথে সম্পর্কযুক্ত। জনাব মনির প্রতিষ্ঠানে সমন্বয়ের যেসব নীতি অনুসরণ করেছেন তা অবশ্যই উক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য সাফল্য বয়ে আনবে।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৬
জনাব রাসেল একজন ঊর্ধ্বতন নির্বাহী। তিনি উৎপাদন ব্যবস্থাপক জনাব শাকিবকে বার্ষিক ২০,০০০ ইউনিট পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয় ব্যবস্থাপক জনাব রুবেলকে সমপরিমাণ পণ্য বিক্রয়ের নির্দেশনা প্রদান করেন। কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনের জন্য জনাব রাসেল সরবরাহকারী ও বিক্রেতাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করেন। [য. বো. ১৭]
ক. সমন্বয় কী? ১
খ. নমনীয়তার নীতি বলতে কী বোঝ? ২
গ. উদ্দীপকে উলিখিত নির্বাহীর সাথে জনাব শাকিব ও জনাব রুবেলের মধ্যে কোন প্রকার সমন্বয়সাধন অনুষ্ঠিত হয়েছে? ৩
ঘ. জনাব রাসেল কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনের জন্য কোন ধরনের সমন্বয়সাধন করেছেন? ব্যাখ্যা করো। ১
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
কোনো প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য এর বিভিন্ন বিভাগ, উপবিভাগ ও ব্যক্তিক প্রচেষ্টাকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রক্রিয়াকে সমন্বয় বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় সমন্বয়, সংশোধন বা পরিবর্তন রাখার সুযোগকে নমনীয়তার নীতি বলে।
প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা, উদ্দেশ্য ও পদ্ধতিতে প্রয়োজনে পরিবর্তন এনে প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যাভিমুখী করাই নমনীয়তার কাজ। প্রতিষ্ঠানে যে প্রতিনিয়ত পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে তা মোকাবেলা করার জন্যই নমনীয়তার নীতি অনুসরণ করা দরকার।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে উলিখিত নির্বাহীর সাথে জনাব শাকিব ও জনাব রুবেলের মধ্যে নিæগামী সমন্বয়সাধন অনুুষ্ঠিত হয়েছে।
নিæগামী সমন্বয়সাধন বলতে যে সমন্বয়সাধন প্রক্রিয়ায় ঊর্ধ্বতন নির্বাহী তার অধস্তন নির্বাহীর কাজের নির্দেশনা প্রদান করেন তাকে বোঝায়। নিæগামী সমন্বয়সাধন প্রক্রিয়ায় অধস্তনরা নির্বাহীর দেওয়া কার্য নির্দেশনা মেনে তাদের কার্যাবলি সম্পাদন করেন।
উদ্দীপকের জনাব রাসেল একজন ঊর্ধ্বতন নির্বাহী। তিনি উৎপাদন ব্যবস্থাপক জনাব শাকিবকে বার্ষিক ৩০,০০০ ইউনিট পণ্য উৎপাদন করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিক্রয় ব্যবস্থাপক জনাব রুবেলকে একই সময়ে ঐ পণ্য বিক্রয়ের নির্দেশ দিয়েছেন। জনাব রুবেল ও জনাব শাকিব বিভাগীয় ব্যবস্থাপক। নির্বাহীর আদেশ নির্দেশ অনুসারে শাকিব ও রুবেল কাজ করেন। কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনের জন্য নির্বাহী নির্দেশ প্রদান করেছেন। এজন্য নির্বাহী সরবরাহকারী এবং বিক্রেতাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করেন। উদ্দীপকের সমন্বয় কাঠামো থেকে বোঝা যায়, জনাব শাকিব ও রুবেলের সাথে নির্বাহীর নিæগামী সমন্বয়সাধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
জনাব রাসেল কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনের জন্য বাহ্যিক সমন্বয়সাধন করেছেন।
কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানের বাইরের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় সংঘটিত হলে তাকে বাহ্যিক সমন্বয়সাধন বলে। বাহ্যিক সমন্বয় সংগঠিত হয় সরবরাহকারী, পণ্য বিক্রেতা, বাইরের বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংগঠনের সাথে।
জনাব রাসেল উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী বা তিনি কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকারী ও বিক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন। প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকারী ও বিক্রেতারা প্রতিষ্ঠানের বাইরের ব্যক্তি বা সংগঠন। প্রতিষ্ঠানের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনের জন্য এ সমন্বয়ের প্রয়োজন।
জনাব রাসেল প্রতিষ্ঠানের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানের বাইরের এ সকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয়সাধন করেছেন। এ ধরনের কার্যসম্পাদনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের বাহ্যিক পক্ষের সাথে সুসম্পর্কের সৃষ্টি হয়। সরবরাহকারীরা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যের দিকে খেয়াল রেখে তাদের মানসম্মত পণ্য সরবরাহ করেন। বিক্রেতারা পণ্যের গুণাগুণ বর্ণনা করে বিক্রয়ের পরিমাণ বৃদ্ধিতে কাজ করে। তাই বলা যায়, প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য জনাব রাসেল সরবরাহকারী ও বিক্রেতাদের সাথে বাহ্যিক সমন্বয়সাধন করেছেন।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৭
জনাব তানভীর একটি প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী। তিনি তার অধীনস্থ সকল বিভাগ, উপবিভাগের কার্যক্রমে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখেন। প্রতিষ্ঠানে কোনো কর্মীর কোনো ধরনের সমস্যা হলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেন। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর বাইরে এ ধরনের যোগাযোগের ফলে কর্মীরা উৎসাহ নিয়ে কাজ করে এবং অনেক সময় নিজেরাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে কাজে উদ্যোগী হয়। নিজ উদ্যোগে কর্মীদের দলীয় প্রচেষ্টার ফলে জনাব তানভীরের প্রতিষ্ঠানটি সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। [ব. বো. ১৭]
ক. ই-মেইল কী? ১
খ. ই-কমার্স বলতে কী বোঝ? ২
গ. জনাব তানভীরের কার্যকর সমন্বয়ের কোন পূর্বশর্তটির সাথে মিল আছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. জনাব তানভীরের সমন্বয় উপায়টি ঐক্য ও ভারসাম্য সৃষ্টিতে সহায়ক- তুমি এ বক্তব্য সমর্থন করো কি? মতামত দাও। ৪
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
E-mail-এর পূর্ণরূপ হলো Electronic mail। ই-মেইল বলতে এক কম্পিউটার/মোবাইল হতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অন্য কোনো কম্পিউটার/মোবাইলে কোনো তথ্য আদান-প্রদানকে বোঝায়।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবসায়ের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিভিন্ন পক্ষের সাথে ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহার করে পণ্য বা সেবাকর্ম ক্রয়-বিক্রয়, লেনদেন কার্যক্রমকে ই-কমার্স বলে।
এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীর জন্য ইন্টারনেট, কম্পিউটার, মডেম, ওয়েবসাইট, ডোমেইন প্রভৃতি বিষয় সংরক্ষণ বা ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। এতে ক্রেতা পণ্যের অর্ডার প্রদানে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। বিক্রেতাও ইন্টারনেটের মাধ্যমে অর্ডার গ্রহণ, বিপণন কাজ প্রভৃতি সম্পাদন করে।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
জনাব তানভীরের কার্যকর সমন্বয়ের স্বেচ্ছামূলক সমন্বয়সাধন পূর্বশর্তটির সাথে মিল রয়েছে।
স্বেচ্ছামূলক সমন্বয়সাধন বলতে কর্মীরা নিজ থেকেই যে সমন্বয়সাধন করেন তাকে বোঝায়। কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত ইচ্ছাশক্তিই হলো স্বেচ্ছামূলক সমন্বয়ের মূল চালিকাশক্তি।
উদ্দীপকে জনাব তানভীর একটি প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী। তিনি তার অধীনস্থ সকল বিভাগ-উপবিভাগের কার্যক্রমে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখেন। প্রতিষ্ঠানের ভিতরে এবং বাইরে কর্মীদের কোনো ধরনের সমস্যা হলে তিনি ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেন। এর ফলে তার কর্মীরা প্রতিষ্ঠানে উৎসাহ নিয়ে কাজ করে। নিজ উদ্যোগে কর্মীদের দলীয় প্রচেষ্টার ফলে জনাব তানভীরের প্রতিষ্ঠানটি সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সুতরাং বলা যায়, উক্ত কার্যাবলি সমন্বয়ের স্বেচ্ছামূলক সমন্বয় পূর্বশর্তটির সাথে মিল আছে।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
জনাব তানভীরের সমন্বয় উপায়টি ঐক্য ও ভারসাম্য সৃষ্টিতে সহায়ক-বক্তব্যটির সাথে আমি একমত পোষণ করি।
সমন্বয় বলতে লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগের প্রচেষ্টাসমূহ একসূত্রে গ্রথিত, সংযুক্ত ও সুসংহত করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। যেকোনো ঐক্যবদ্ধ বা দলবদ্ধ প্রচেষ্টায় সমন্বয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দলের সদস্যদের কাজের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে দলীয় প্রচেষ্টা সার্থক হতে পারে না।
উদ্দীপকের জনাব তানভীর একটি প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী। তিনি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সমস্যা নিজে তদারকি করেন। যার ফলে কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠানে কল্যাণের কাজ করতে উদ্যোগী হয়।
প্রতিষ্ঠানটিতে সমন্বয় বিষয়টি বিদ্যমান থাকায় কর্মীরা নিজেদের কাজ সুশৃঙ্খলভাবে করতে পারে। সকল কর্মী সমানভাবে প্রতিষ্ঠানে কাজ করায় কাজের মধ্যে ভারসাম্য সৃষ্টি হয়। নিজ উদ্যোগে কর্মীদের দলীয় প্রচেষ্টার ফলে জনাব তানভীরের প্রতিষ্ঠানটি সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হয়। তাই বলা যায়, জনাব তানভীর তার অধীনস্থ কর্মীদের সাথে সমন্বয়ের উপায়টি বিদ্যমান রেখেছেন তা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে ঐক্য ও ভারসাম্য সৃষ্টিতে সহায়ক হবে-এ বক্তব্যটি সমর্থনযোগ্য।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৮
জনাব নিখিল একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। অভিজ্ঞতার অভাবে তিনি ব্যবসায় আরম্ভ করার সময় সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেননি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিদের কার কী দায়িত্ব এবং কে কার নিকট কাজের জন্য দায়ী তা সুনির্দিষ্ট করা ছিল না। ফলে প্রতিষ্ঠানের কাজের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব পরিলক্ষিত হয়। পরবর্তীতে অভিজ্ঞ প্রশাসক জনাব হালিমকে ব্যবস্থাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। জনাব হালিম প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্ব প্রবাহ এবং প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্য সুনির্দিষ্ট করে একটি সহজ সংগঠন প্রবর্তন করেন। ফলে অতি অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যক্তি ও কাজের মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় প্রতিষ্ঠিত হয়। [ঢা. বো. ১৬]
ক. সমন্বয়ের নিরবচ্ছিন্নতা নীতি কী? ১
ই খ. দলীয় সমঝোতায় সমন্বয়ের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো। ২
গ. জনাব নিখিলের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে প্রথমে সমন্বয়সাধনের কোন নীতির অভাব পরিলক্ষিত হয়? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “জনাব হালিম কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপে কার্যকর সমন্বয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি পূর্বশর্ত পূরণ হওয়াতেই সুষ্ঠু সমন্বয় প্রতিষ্ঠিত হয়”- উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন করো। ৪
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
যেকোনো প্রচেষ্টা বা কাজ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে অবিরাম সমন্বয়ের নীতিকে ধারাবাহিকতার/নিরবচ্ছিন্নতার নীতি বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রতিটি ব্যক্তি, দল ও উপদল, বিভাগ ও উপবিভাগ যার যার মতো না চলে দলীয় সমঝোতা অনুযায়ী বা মিলেমিশে চলার নীতিকেই দলীয় সমঝোতার নীতি বলে।
স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয়ের ক্ষেত্রে দলীয় সমঝোতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দল ও উপদলের প্রতিটি সদস্য যদি উপলব্ধি করতে পারে যে, কোনো একক ব্যক্তি বা দলের পক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয় এবং সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমেই তা অর্জন সম্ভব, তাহলে সবাই সম্মিলিত প্রয়াসে লিপ্ত হয়। কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্যার্জনের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা বা দলীয় সমঝোতার নীতি অধিক কার্যকর।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
জনাব নিখিলের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে প্রথমে সমন্বয়সাধনের প্রত্যক্ষ যোগাযোগের নীতির অভাব পরিলক্ষিত হয়।
প্রত্যক্ষ যোগাযোগর নীতি হলো বিভিন্ন ব্যক্তি, বিভাগ, উপবিভাগের মধ্যে কোনোরূপ বাধা ছাড়া সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা। প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যার্জনে সহায়তা করে।
নিখিল একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিদের কার কী দায়িত্ব এবং কে কার নিকট কাজের জন্য দায়ী তা সুনির্দিষ্ট করা ছিল না। এতে কর্মীরা একজন অন্যজনের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে না। এতে প্রতিষ্ঠানের একটি বিভাগের সাথে অন্য বিভাগের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকলে তথ্যের আদান-প্রদান দ্রুত হয়। তাই বলা যায়, প্রত্যক্ষ যোগাযোগ না থাকায় নিখিল কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিত করতে পারেনি।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
জনাব হালিম কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপে কার্যকর সমন্বয়ের গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত ‘সহজ সংগঠন’ পূরণ হওয়াতে সুষ্ঠু সমন্বয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে আমি মনে করি।
যে শর্ত বা নির্দেশ আগে থেকে বিদ্যমান থাকলে কাজটি সহজ হয় সেটিই পূর্বশর্ত। সমন্বয়ের ক্ষেত্রে এমনই একটি পূর্বশর্ত হলো সহজ সংগঠন।
জনাব হালিম প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্ব প্রবাহ এবং প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্য সুনির্দিষ্ট করে একটি সহজ সংগঠন প্রবর্তন করেছেন। সহজ সংগঠন একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যকর সমন্বয় নিশ্চিত করে। জনাব হালিম সহজ সংগঠন প্রবর্তন করায় প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি বিভাগ ও উপবিভাগের মধ্যে যোগসূত্র সৃষ্টি হবে।
জনাব হালিম সংগঠন কাঠামো প্রণয়নে যদি কাজগুলো স্পষ্ট ও ক্ষমতা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট করে তাহলে সবার কাছে বোধগম্য হবে। এ ধরনের সহজ সংগঠন কাঠামো কাজের বিভাগীয়করণে সাহায্য করে। সংগঠন কাঠামো যত সহজ হয় সমন্বয়ও তত সহজ হয়। সুতরাং জনাব হালিম সহজ সংগঠন কাঠামো প্রণয়ন করে কার্যকর সমন্বয় নীতির পূর্বশর্ত পালন করেছেন।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৯
মধুমতি প্লাস্টিক কারখানার তিনটি উৎপাদন ইউনিট যথাক্রমে কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর ও বগুড়ায় অবস্থিত। এর প্রধান কার্যালয় রংপুরের দিকনির্দেশনায় প্রতিষ্ঠান তিনটির ব্যবস্থাপকগণ উৎপাদন ও বণ্টন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। প্রধান কার্যালয় প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পত্রবাহক, ডাক ও কুরিয়ারের মাধ্যমে দিয়ে থাকেন। ফলে অনেক নির্দেশনাই দেরিতে পৌঁছে এবং নির্দেশনা বাস্তবায়নে বিলম্ব ঘটে। এ অবস্থার উত্তরণের জন্য ইউনিট ব্যবস্থাপকগণ প্রধান কার্যালয়ে কম্পিউটার ক্রয় ও ইন্টারনেট সংযোগের অনুমোদন চায়। কম্পিউটার ক্রয়ের বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান নীতিমালায় না থাকায় প্রধান কার্যালয় প্রস্তাবটি নাকচ করে দেয়। ফলে ইউনিট ব্যবস্থাপকগণ প্রধান কার্যালয়ের সিদ্ধান্ত সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করতে পারছে না। ফলে উৎপাদন ও বণ্টন ব্যাহত হচ্ছে। [রা. বো. ১৬]
ক. সমন্বয় কী? ১
খ. সমান্তরাল সমন্বয়ের সাধন বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত সমন্বয়ের কোন নীতির অনুপস্থিতির জন্য ইউনিট ব্যবস্থাপকগণের পক্ষে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না-ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত সমস্যা সমাধানে প্রধান কার্যালয়ের কী করা উচিত বলে তুমি মনে করো? তোমার মতামতের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্তে প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগের প্রচেষ্টাকে একসাথে গ্রথিত, সংযুক্ত ও সুসংহত করার প্রক্রিয়াকে সমন্বয় বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
সমপর্যায়ের বিভিন্ন বিভাগ বা কর্মীদের কার্যাবলির মধ্যে সমন্বয়ের ব্যবস্থা করাই হলো সমান্তরাল সমন্বয়।
এ ধরনের সমন্বয়ে কর্মীদের দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব সমপর্যায়ভুক্ত। প্রতিষ্ঠানের ক্রয় ব্যবস্থাপক, উৎপাদন ব্যবস্থাপক ও বিক্রয় ব্যবস্থাপকের কাজের মধ্যে সমন্বয় হলো সমান্তরাল সমন্বয়ের উদাহরণ।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে বর্ণিত সমন্বয়ে প্রত্যক্ষ যোগাযোগের নীতির অনুপস্থিতির জন্য ইউনিট ব্যবস্থাপকগণের পক্ষে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না।
প্রত্যক্ষ যোগাযোগের নীতি হলো বিভিন্ন ব্যক্তি, বিভাগ ও উপবিভাগের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার যে নীতি। যোগাযোগের অভাবে স্বাভাবিকভাবেই কার্যক্ষেত্রে সমন্বয়ের অভাব ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
মধুমতি প্লাস্টিক কারখানার তিনটি ইউনিট তিনটি জায়গায় অবস্থিত। এর প্রধান কার্যালয় রংপুর হওয়ায় প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়ন সম্ভব হচ্ছে না। এক্ষেত্রে প্রধান কার্যালয় প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পত্রবাহক, ডাক ও কুরিয়ারের মাধ্যমে দিয়ে থাকেন। এতে অনেক নির্দেশনাই দেরিতে বা বিলম্বে পৌঁছায়। ফলে বিভাগ ও উপবিভাগের মধ্যে সমন্বয়সাধনের বিঘ্ন ঘটে। প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানের অভাবে প্রতিষ্ঠানে কার্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তাই বলা যায়, মধুমতি প্লাস্টিক লি.-এর প্রত্যক্ষ যোগাযোগের নীতির প্রয়োজন।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে বর্ণিত সমস্যা সমাধানে প্রধান কার্যালয়ের নমনীয়তার নীতি অনুসরণ করা উচিত।
নমনীয়তার নীতি হলো চিন্তা, কাজ ও পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে প্রচেষ্টাকে লক্ষ্যাভিমুখী করার নীতি। সমন্বয় কার্যকে ফলদায়ক করার জন্য প্রয়োজনীয় নমনীয়তার সুযোগ থাকা উচিত। ফলে পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সাথে সহজে সামঞ্জস্য রক্ষা করা যায়।
মধুমতি প্লাস্টিক কারখানার ইউনিট ব্যবস্থাপকগণ প্রধান কার্যালয়ে কম্পিউটার ক্রয় ও ইন্টারনেট সংযোগের অনুমোদন চান। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার ক্রয়ের নীতি না থাকায় এটি সম্ভব হয় না। যার ফলে প্রতিষ্ঠানটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
যদি মধুমতি প্লাষ্টিক নমনীয়তার নীতি অনুসরণ করে তাহলে যেকোনো সমস্যা বা ত্রুটি উদ্ঘাটিত হলে সমাধান করা সম্ভব হবে। আবার প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যের সাথে মিল রেখে ব্যবস্থাপনার কার্য পরিচালনা করা যাবে। একই সাথে বিশৃঙ্খলা ও ত্রুটি-বিচ্যুতি ব্যবস্থাপকগণ সমাধান করতে পারবেন। সঠিক উৎপাদন ও বণ্টনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি লক্ষ্যের দিকে ধাবিত হবে। তাই বলা যায়, প্রধান কার্যালয়ে নমনীয়তার নীতি অনুসরণ করা জরুরি।
সৃজনশীল প্রশ্ন-১০
“অর্নবস্ কোম্পানি লি.”-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বোর্ড সভায় পরবর্তী বছরের সামগ্রিক লক্ষ্য নির্ধারণ করে তা বিভাগীয় প্রধানদের অবহিত করেন। বিভাগীয় প্রধানগণ স্ব-স্ব বিভাগের লক্ষ্য নির্ধারণের পরিকল্পনা নিলেও আন্তঃবিভাগীয় পরিকল্পনায় পারস্পরিক সংহতি স্থাপনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। বিষয়টি বোর্ডের নজরে এলে বোর্ড উৎপাদন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রধান ও অন্য বিভাগের প্রধানদের সদস্য করে বিভাগীয় কর্মকাণ্ডে সংহতি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি স্থায়ী কমিশন গঠন করেন। [দি. বো. ১৬]
ক. সমন্বয় কী? ১
খ. দলীয় প্রচেষ্টা এগিয়ে নিতে সমন্বয় অপরিহার্য কেন? ২
গ. উদ্দীপকের কোম্পানিতে সমন্বয়ের কোন নীতি অনুসরণ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. বোর্ড কর্তৃক সমন্বয় কমিটি গঠন করে দেওয়ায় ভবিষ্যতে বিশৃঙ্খলা কমবে- তুমি কি একমত? যুক্তি দাও। ৪
১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগের প্রচেষ্টাকে একসাথে গ্রথিত, সংযুক্ত ও সুসংহত করার প্রক্রিয়াকে সমন্বয় বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগের প্রচেষ্টাসমূহ একসূত্রে গ্রথিত, সংযুক্ত ও সুসংহত করার প্রক্রিয়াকে সমন্বয় বলে।
যেকোনো দলবদ্ধ প্রচেষ্টায় সমন্বয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দলের সদস্যদের কাজের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে দলীয় প্রচেষ্টা সার্থক হতে পারে না। সেক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই লক্ষ্যার্জনের জন্য দলীয় প্রচেষ্টা এগিয়ে নিতে সমন্বয় অপরিহার্য।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের কোম্পানিতে উদ্দেশ্যের ঐক্যনীতি অনুসরণ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
এ নীতি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি ব্যক্তি, বিভাগ ও উপবিভাগের উদ্দেশ্যের ঐক্য সৃষ্টি করা হয়। এজন্য প্রতিটি বিভাগ উপবিভাগ বা ইউনিটের উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন হতে হবে। কোনো বিভাগ ব্যতিক্রমী উদ্দেশ্য অর্জনের চেষ্টা করলে প্রাতিষ্ঠানিক সফলতা অর্জন সম্ভব হবে না।
উদ্দীপকে “অর্নবস্ কোম্পানি লি.”-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কোম্পানির বোর্ড সভায় পরবর্তী বছরের সামগ্রিক লক্ষ্য নির্ধারণ করে তা বিভাগীয় প্রধানদের অবহিত করেন। বিভাগীয় প্রধানগণ নিজ নিজ বিভাগের লক্ষ্য নির্ধারণের পরিকল্পনা নিলেও আন্তঃবিভাগীয় পরিকল্পনায় পারস্পরিক সংহতি স্থাপনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ কারণেই বিভাগ ও উপবিভাগের উদ্দেশ্যের মধ্যে অসামঞ্জস্য দেখা দেয়। অর্থাৎ বিভাগসমূহের উদ্দেশ্যের মধ্যে ঐক্য থাকলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের কোম্পানিটিতে বোর্ড কর্তৃক সমন্বয় কমিটি গঠন করে দেওয়ায় ভবিষ্যতে বিশৃঙ্খলা কমবে বলে আমি মনে করি।
সাধারণত প্রতিষ্ঠানে বিশেষ কোনো সমস্যা দেখা দিলে কমিটি গঠন করা হয়। প্রতিষ্ঠানের বিশৃঙ্খলা সমাধানে কমিটির ব্যক্তিবর্গ সম্মিলিতভাবে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
উদ্দীপকের অর্নবস্ কোম্পানি লিমিটেডে বিভিন্ন বিভাগে উদ্দেশ্যের অসামঞ্জস্যের কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। বিষয়টি বোর্ডের নজরে এলে বোর্ড উৎপাদন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রধান ও অন্য বিভাগের প্রধানদের সদস্য করে একটি স্থায়ী কমিটি গঠন করেন।
উদ্দীপকের অর্নবস্ কোম্পানিতে গঠিত স্থায়ী কমিটির সদস্যরা প্রথমে প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলার যথাযথ কারণ নির্ধারণ করবেন। এরপর উক্ত বিশৃঙ্খলা সমাধানে প্রয়োজনীয় পরামর্শ একটি প্রতিবেদন আকারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জমা দেবেন। পরবর্তীতে অনুরূপ পরিস্থিতির যেন পুনরাবৃত্তি না হয় প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থাপকগণ সেদিকে খেয়াল রাখতে পারবেন। আর এভাবেই সমন্বয় কমিটি গঠনের ফলে অর্নবস্ কোম্পানিতে ভবিষ্যতে বিশৃঙ্খলা কমবে।
No comments