HSC ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর অধ্যায়-০২
ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা
২য় পত্র
অধ্যায়-০২
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
HSC Business Organization and
Management 2nd Paper
Srijonshil
Question and Answer
পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, এ অধ্যায়ে বোর্ড পরীক্ষা, শীর্ষস্থানীয় কলেজসমূহের নির্বাচনি পরীক্ষা এবং বাছাইকৃত এক্সক্লুসিভ মডেল টেস্টের প্রশ্নগুলোর পূর্ণাঙ্গ উত্তর দেওয়া হয়েছে। এগুলো অনুশীলন করলে তোমরা এ অধ্যায় থেকে যেকোনো সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর সহজেই লিখতে পারবে।
AB লি.-এর উৎপাদন বিভাগ তার কাজগুলোকে প্রকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে প্রত্যেকের দায়িত্ব ও ক্ষমতা নির্দিষ্ট করে দেয়। এতে কর্মীর কাজ সহজ হয়। আবার পরিচালক পর্ষদের ২০% উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠানের সকল বিভাগের কর্মকর্তারা একই লক্ষ্যকে সামনে রেখে অধস্তনদের পরামর্শ ও নির্দেশনা প্রদান করেন। ফলে কার্যক্ষেত্রে জটিলতা না থাকায় লক্ষ্য পূরণ সহজ হয়। [ঢা. বো. ১৭]
ক. প্রশাসন কী? ১
খ. ব্যবস্থাপকীয় দক্ষতা কার্য পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ কেন? ২
গ. উদ্দীপকের উৎপাদন বিভাগ ফেয়লের কোন নীতি অনুসরণ করে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ‘নির্দেশনার ঐক্যেই পরিচালক পর্ষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে’- উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো। ৪
১ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ স্তর যেখানে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, কৌশল ও নীতি নির্ধারণ করা হয় তাকে প্রশাসন বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট কাজগুলো সঠিক সময়ে, স্বল্প ব্যয়ে এবং সঠিকভাবে সম্পাদন করার সামর্থ্যকে ব্যবস্থাপকীয় দক্ষতা বলে।
একজন ব্যবস্থাপকের দক্ষতার ওপর নির্ভর করে যে, তিনি কত ন্যূনতম শক্তি, সামর্থ্য ও সম্পদকে কাজে লাগিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন। একজন ব্যবস্থাপক কার্যসম্পাদনে যতই দক্ষ হন, ততই তিনি প্রাতিষ্ঠানিক উপকরণসমূহের সদ্ব্যবহার করতে পারেন। আর প্রাতিষ্ঠানিক উপকরণের সদ্ব্যবহারের ওপরই প্রতিষ্ঠানের সফলতা নির্ভর করে। এজন্যই ব্যবস্থাপকীয় দক্ষতা কার্য পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের উৎপাদন বিভাগ ফেয়লের কার্যবিভাজন নীতি অনুসরণ করে।
প্রতিষ্ঠানের কাজকে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করে প্রতিটি বিভাগের দায়িত্ব এক একজন কর্মীর ওপর অর্পণ করা হয় কার্যবিভাজনের নীতিতে প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক বিভাগ ও উপবিভাগে নিয়োজিত জনশক্তির কাজকে সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়।
উদ্দীপকের AB লি. প্রতিষ্ঠানটি উৎপাদন বিভাগের কাজকে কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে। কাজগুলোকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করার পর প্রত্যেক কর্মীর দায়িত্ব ও ক্ষমতা নির্দিষ্ট করে দেয়। এতে কর্মীরা যার যা দায়িত্ব রয়েছে, তা সহজে বুঝতে পারেন এবং তাদের কাজ সহজে করতে পারেন। কার্যবিভাজনের নীতিতেও এভাবে কাজকে ভাগ করা হয় এবং কর্মীদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের উৎপাদন বিভাগ ফেয়লের কার্যবিভাজনের নীতিটি অনুসরণ করছে।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
‘নির্দেশনার ঐক্যের মাধ্যমেই পরিচালক পর্ষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে’- আমি এর সাথে একমত।
নির্দেশনার ঐক্যের নীতির মূলকথা হলো একটি প্রধান উদ্দেশ্যের আলোকে প্রতিষ্ঠানের সব কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। এ প্রধান উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের বিষয়টি মাথায় রেখে তার আলোকে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়।
উদ্দীপকের AB লি.-এর পরিচালনা পর্ষদ তাদের প্রতিষ্ঠানে ২০% উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেন। এ লক্ষ্যকে বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানের সব বিভাগের কর্মকর্তারা অধস্তনদের পরামর্শ ও নির্দেশনা প্রদান করেন। ফলে কার্যক্ষেত্রে জটিলতা না থাকায় প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য পূরণ সহজ হয়েছে।
উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটি একটি লক্ষ্যের আলোকে সব বিভাগের কর্মীদের কাজের নির্দেশনা প্রদান করেছে। এতে সব বিভাগ ও উপবিভাগের কর্মকাণ্ড একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যকেন্দ্রিক হয়েছে। ফলে প্রত্যেক কর্মী নিজের দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হয়েছে। এজন্য প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নও সহজ হয়েছে। তাই বলা যায়, নির্দেশনার ঐক্য মেনে চলার কারণেই পরিচালক পর্ষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০২
জাহানারা বুটিকসে ভিন্ন ভিন্ন কর্মদক্ষতাসম্পন্ন ১৫ জন লোক কর্মরত আছেন। তাদের কাজ নির্দিষ্ট করা নেই। সবাই সব কাজ করে থাকেন। তৈরি পোশাক বিক্রয় কিংবা হিসাব-নিকাশের জন্যও নির্দিষ্ট কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাতে প্রায়শই হিসাবে ভুল হয়। কর্মীদের কার্য পরিমাপও জটিল হয়ে পড়ে। বুটিকসের মালিক জাহানারা বেগম লক্ষ করলেন যে, কিছু কাজে কিছু লোক অন্যদের চেয়ে বেশি পারদর্শী। তিনি কাজের পারদর্শিতা অনুসারে কর্মীদের কাজ বিভক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। [রা. বো. ১৭]
ক. আদেশের ঐক্য নীতি কী? ১
খ. ব্যবস্থাপকীয় দক্ষতা বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত জাহানারা বুটিকসে প্রথম পর্যায়ে ব্যবস্থাপনার কোন নীতি উপেক্ষিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত বুটিকসে পরবর্তী পর্যায়ে গৃহীত সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা মূল্যায়ন করো। ৪
২ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
একজন কর্মী প্রত্যক্ষভাবে একই সময়ে শুধু একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট হতে আদেশ গ্রহণ করবে, এ নীতিকে আদেশের ঐক্য নীতি বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট কাজগুলো সঠিক সময়ে, স্বল্প ব্যয়ে এবং সঠিকভাবে সম্পাদন করার সামর্থ্যকে ব্যবস্থাপকীয় দক্ষতা বলে।
একজন ব্যবস্থাপকের দক্ষতার ওপর নির্ভর করে তিনি কত ন্যূনতম শক্তি, সামর্থ্য ও সম্পদকে কাজে লাগিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন। একজন ব্যবস্থাপক কার্যসম্পাদনে যতই দক্ষ হন, ততই তিনি প্রাতিষ্ঠানিক উপকরণসমূহের সদ্ব্যবহার করতে পারেন। আর প্রাতিষ্ঠানিক উপকরণের সদ্ব্যবহারের ওপরই প্রতিষ্ঠানের সফলতা নির্ভর করে।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের জাহানারা বুটিকসে প্রথম পর্যায়ে ব্যবস্থাপনার কার্যবিভাজনের নীতি উপেক্ষিত হয়েছে।
এ নীতি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের কাজকে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করে প্রতিটি বিভাগের দায়িত্ব একজন কর্মীর ওপর অর্পণ করা হয়। কার্যবিভাজনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক বিভাগ ও উপবিভাগে নিয়োজিত জনশক্তির কাজকে সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়।
উদ্দীপকে জাহানারা বুটিকসে ভিন্ন ভিন্ন কর্মদক্ষতাসম্পন্ন ১৫ জন লোক কর্মরত আছেন। তাদের কাজ নির্দিষ্ট করা নেই। ফলে সবাই সব ধরনের কাজ করেন। কাজ নির্দিষ্ট না থাকায় কাউকে তার কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হচ্ছে না। ফলে কোনো কাজই মানসম্মতভাবে হচ্ছে না। তাই বলা যায়, জাহানারা বুটিকসে কার্যবিভাজনের নীতি উপেক্ষিত হয়েছে।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
জাহানারা বুটিকসে পরবর্তী পর্যায়ে গৃহীত শৃঙ্খলতার নীতির সিদ্ধান্তটি যৌক্তিক।
শৃঙ্খলতার নীতি অনুযায়ী যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য স্থানে এবং সঠিক বস্তুকে সঠিক স্থানে স্থাপন করা হয় । যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য স্থানে বসানো না গেলে কখনোই তার নিকট থেকে কাক্সিক্ষত ফল লাভ সম্ভব হয় না।
উদ্দীপকে জাহানারা বুটিকসে কর্মরত কর্মীদের কাজ সুনির্দিষ্টভাবে ভাগ করা নেই। ফলে কর্মীরা উৎপাদন প্রক্রিয়ার সব ধরনের কাজ করছেন। এ অবস্থায় বুটিকসের মালিক জাহানারা বেগম সিদ্ধান্ত নিলেন কর্মীর কাজের পারদর্শিতা অনুযায়ী কাজকে ভাগ করে দিবেন। অর্থাৎ যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য স্থানে নিয়োগ দেবেন, যা শৃঙ্খলার নীতির আওতায় পড়ে।
শৃঙ্খলা নীতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীদের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। এতে প্রত্যেকে যার যার কাজ যথাসময়ে বাস্তবায়ন করতে পারেন। তাছাড়া একজন কর্মীর কাজ সুনির্দিষ্ট করা হলে ঐ কাজে কর্মী দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পান। ফলে কার্যসম্পাদন সহজ ও সুন্দর হয় এবং কর্মীর কাজে নিপুণতা আসে। তাই বলা যায়, জাহানারা বুটিকসে গৃহীত সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত যৌক্তিক।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৩
মি. মল্লিক বি.বি.এ পাস করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছেন। প্রথম দিন অফিসে গিয়ে তিনি দেখলেন প্রতিটি কর্মীরই কাজ নির্দিষ্ট আছে। তিনি ভাবলেন এ নীতিতে সত্যিই কাজে গতি ও মান বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেদিন তার বিভাগীয় প্রধান তাকে ডেকে বললেন, তাদের প্রতিষ্ঠানে পদমর্যাদা অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো আছে। যেন কর্মীদের মধ্যে কার্যসন্তুষ্টি বিরাজ করে। [কু. বো. ১৭]
ক. বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক কে? ১
খ. লক্ষ্য অর্জনে ‘একতাই বল’ নীতি গুরুত্বপূর্ণ কেন? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকে মি. মল্লিক প্রথমত কোন নীতির কথা ভেবেছিলেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. বিভাগীয় প্রধান যে নীতিকে ইঙ্গিত করেছেন, তা কর্মী সন্তুষ্টি অর্জনে সহায়ক- বিশ্লেষণ করো। ৪
৩ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক হলেন আমেরিকান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ফ্রেডেরিক উইন্সলো টেলর (Frederick Winslow
Taylor)।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রতিষ্ঠানের সব কর্মী ঐক্যবদ্ধ হয়ে লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করাকে একতাই বল নীতি বলে।
এ নীতি অনুযায়ী কর্মীদের মধ্যে দলগত চেতনা ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্যার্জনের জন্য সব কর্মীকে একতাবদ্ধ থাকতে হয়। এতে কর্মীরা কাজ করতে উৎসাহী হয়। ফলে কর্মীর মনোবলও বৃদ্ধি পায়।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের মি. মল্লিক প্রতিষ্ঠানে প্রথমত কার্যবিভাজনের নীতির কথা ভেবেছিলেন।
কার্যবিভাজনের নীতিতে প্রতিষ্ঠানের সমুদয় কাজগুলোকে কাজের প্রকৃতি অনুসারে বিভিন্ন ভাগে ভাগ (যেমন: ক্রয় বিভাগ, বিক্রয় বিভাগ, অর্থ বিভাগ, উৎপাদন বিভাগ ইত্যাদি) করে বিশেষজ্ঞের ওপর কার্যভার অর্পণ করা হয়। এর মাধ্যমে প্রত্যেক বিভাগ ও উপ-বিভাগে নিয়োজিত জনশক্তির কাজকে সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়।
উদ্দীপকের মি. মল্লিক বি.বি.এ পাস করার পর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছেন। প্রথম দিন অফিসে গিয়ে তিনি দেখলেন প্রত্যেক কর্মীর কাজই নির্দিষ্ট করা আছে। অর্থাৎ কর্মীর যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী কাজকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি ভাবলেন, এ নীতিতে কাজের গতি ও মান বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব বৈশিষ্ট্য কার্যবিভাজন নীতির সাথে সংগতিপূর্ণ। সুতরাং মি. মল্লিক প্রথমত প্রতিষ্ঠানে কার্যবিভাজনের নীতির কথাই ভেবেছিলেন।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের বিভাগীয় প্রধান পারিশ্রমিকের নীতির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।
পারিশ্রমিকের নীতিতে প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মীদের কাজের প্রকৃতি, মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের উপযুক্ত বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। বর্তমান প্রতিযোগিতাপূর্ণ ব্যবসায় জগতে প্রতিষ্ঠানের জন্য যোগ্য ও দক্ষ জনবল দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনায় এ নীতি প্রয়োগের কোনো বিকল্প নেই।
উদ্দীপকের মি. মল্লিকের কর্মরত প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় প্রধান তাকে ডেকে বললেন, উক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মীর পদমর্যাদা অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো আছে। অর্থাৎ উক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের যোগ্যতা, মেধা, কাজের প্রকৃতি ইত্যাদি অনুসারে বেতন প্রদান করা হয়, যা পারিশ্রমিকের নীতিকেই ইঙ্গিত করে।
পারিশ্রমিকের নীতি অনুসারে উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বেতন পান। এতে কর্র্মীদের মধ্যে পারিশ্রমিক নিয়ে অসন্তুষ্টির সৃষ্টি হয় না। আর একজন কর্মী তার প্রত্যাশা অনুযায়ী পারিশ্রমিক পেলে কাজে উৎসাহী হন। তখন তিনি কাজে সম্পূর্ণভাবে মনোনিবেশ করেন এবং তার সর্বোচ্চ কার্যদক্ষতা প্রতিষ্ঠানে ব্যয় করেন। এর ফলে অন্য কর্মীবৃন্দও তাদের সর্বোচ্চ কর্মদক্ষতা দেখাতে সচেষ্ট হন। ফলে সবার মধ্যে সন্তুষ্টি অর্জন বিরাজ করে।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৪
জুবলী নিটওয়্যার বিদেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। জনাব সাজিদ উক্ত প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা। তিনি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও নীতি প্রণয়নের সাথে জড়িত। প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য তিনি কর্মীদের কার্যঘণ্টা পূর্বের চেয়ে ২ ঘণ্টা বাড়িয়ে দেন। তবে এজন্য কর্মীদেরকে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করেন না। [চ. বো. ১৭]
ক. বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা কী? ১
খ. আদেশের ঐক্য বলতে কী বোঝায়? ২
গ. উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনার কোন নীতির ব্যত্যয় ঘটেছে তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. “জনাব সাজিদ একজন প্রশাসক, ব্যবস্থাপক নন”- তুমি কি এর সাথে একমত? ৪
৪ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বিচার-বিশ্লেষণ ও সুপরিকল্পিত রীতিনীতির আলোকে প্রতিষ্ঠানের শ্রম ও উৎপাদন বৃদ্ধির কৌশলকে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
একজন কর্মী একই সময়ে প্রত্যক্ষভাবে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট হতে আদেশ পাওয়া ও তা মেনে চলাকে আদেশের ঐক্য নীতি বলে।
একজন কর্মীর আদেশদাতা একাধিক হলে একই সময়ে দু’জন ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশ দিতে পারেন। এতে দ্বৈত অধীনতার সৃষ্টি হয়। ফলে কর্মীর পক্ষে যথাযথভাবে সকল কাজ সম্পাদন করা সম্ভব হয় না। তাই প্রতিষ্ঠানে আদেশের ঐক্য নীতি অনুসরণ করা অপরিহার্য।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনার পারিশ্রমিকের নীতির ব্যত্যয় ঘটেছে।
প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কাজের প্রকৃতি, সময়, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ইত্যাদি বিবেচনায় সুষ্ঠু ও ন্যায্য বেতন কাঠামো স্থির করা আবশ্যক। এটি হলো পারিশ্রমিক নীতির মূল কথা। এ নীতির বাস্তবায়ন করলে কর্মীরা কাজের প্রতি সন্তুষ্ট হন এবং উৎসাহ নিয়ে কাজ করেন।
উদ্দীপকের জুবলী নিটওয়্যার বিদেশে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক একটি প্রতিষ্ঠান। জনাব সাজিদ উক্ত প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা। তিনি প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন বৃদ্ধি করতে চান। এজন্য কর্মীদের কার্য সময় পূর্বের চেয়ে ২ ঘণ্টা বাড়িয়ে দেন। তবে এই ২ ঘণ্টা কাজের জন্য বাড়তি কোনো সুবিধা প্রদান করেন না। এ থেকে প্রমাণিত হয়, সাজিদ সাহেব কর্মীদের দিয়ে অতিরিক্ত সময় কাজ করালেও তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক প্রদান করেন না। তাই বলা যায়, অতিরিক্ত সময়ের জন্য পারিশ্রমিক প্রদান না করায় পারিশ্রমিক নীতির ব্যত্যয় ঘটেছে।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের জনাব সাজিদ একজন প্রশাসক, ব্যবস্থাপক নন -আমি এ বক্তব্যের সাথে একমত।
ব্যবস্থাপনার সর্বোচ্চ স্তরে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ হলেন প্রশাসক। প্রশাসক প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য, নীতিমালা, পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রভৃতি কাজের সাথে জড়িত থাকেন। আর প্রশাসকের প্রণীত উদ্দেশ্য ও নীতিমালা বাস্তবায়ন করেন ব্যবস্থাপকবৃন্দ।
উদ্দীপকের জনাব সাজিদ জুবলী নিটওয়্যারের একজন কর্মকর্তা। তিনি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও নীতি প্রণয়নের সাথে জড়িত। তিনি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কর্মীদের কাজের সময় ২ ঘণ্টা বাড়িয়ে দেন। এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তাকে প্রদান করা হয়েছে। এসব কাজ মূলত প্রশাসকবৃন্দ করে থাকেন।
জনাব সাজিদের নীতি নির্ধারণ অনুসারে কর্মীরা কাজ করেন। কর্মীরা তার কাছে জবাবদিহি করে থাকেন। তাই জনাব সাজিদকে ব্যবস্থাপক না বলে প্রশাসক বলাই শ্রেয়।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৫
জনাব সূহা একটি উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য নির্ধারণ, নীতিমালা প্রস্তুত, পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাজারজাতকরণ কৌশল নির্ধারণের সাথে সম্পৃক্ত। সম্প্রতি তিনি কারখানায় অত্যাধুনিক তিনটি মেশিন স্থাপন করেন। পুরাতন মেশিনচালকগণ নতুন মেশিন চালানোয় পারদর্শী নয়। এতে উৎপাদন বৃদ্ধির পরিবর্তে উৎপাদন কাজে বিঘœ ঘটছে। যার কারণে তিনি মেশিন চালকদের দক্ষতা বৃদ্ধির চিন্তা করছেন। [সি. বো. ১৭]
ক. POSDCORB-এর পূর্ণরূপ লেখো। ১
খ. ব্যবস্থাপনাকে সর্বজনীন বলা হয় কেন? ২
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত মেশিন চালকদের দক্ষতা বৃদ্ধির কাজটি ব্যবস্থাপনার কোন কাজের সাথে সম্পৃক্ত? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে সূহা কর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত- যুক্তিসহ মূল্যায়ন করো। ৪
৫ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
POSDCORB-এর পূর্ণরূপ হলো P = Planning, O =
Organizing, S = Staffing, D = Directing, CO = Coordinating, R = Reporting ও B = Budgeting।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
‘ব্যবস্থাপনা সর্বজনীন’ উক্তিটি গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের (ঝড়পৎধঃবং)। ব্যবস্থাপনার সর্বজনীনতা বলতে সর্বত্র, সব ক্ষেত্রে, সকলের দ্বারা স্বীকৃত ব্যবস্থাপনা জ্ঞানের আবশ্যকতা ও প্রয়োগ যোগ্যতাকে বোঝায়।
পরিবার, রাষ্ট্র এবং ব্যবসায় সংগঠনের সব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি (পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, নির্দেশনা, প্রেষণা ও নিয়ন্ত্রণ) প্রয়োগ করা হয়। স্থানীয় পরিবেশ-পরিস্থিতি, সামাজিক রীতি-নীতি ইত্যাদি কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। তবে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি প্রয়োগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। তাই ব্যবস্থাপনাকে সর্বজনীন বলা হয়।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে বর্ণিত মেশিনচালকদের দক্ষতা বৃদ্ধির কাজটি প্রশিক্ষণের সাথে সম্পৃক্ত।
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মীদের নতুন ধারণা, পদ্ধতি, কৌশল ইত্যাদি শেখানোর মাধ্যমে তাদের কার্যদক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়। প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের কাজে দক্ষ ও পারদর্শী করে তুলতে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হয়।
উদ্দীপকের জনাব সূহা একটি উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত। তিনি কারখানায় অত্যাধুনিক তিনটি মেশিন স্থাপন করেন। কিন্তু পুরাতন মেশিনচালকগণ নতুন মেশিন চালানোর কাজে পারদর্শী নন। এতে উৎপাদন বৃদ্ধির পরিবর্তে উৎপাদন কাজে বিঘœ ঘটছে। তাই তিনি মেশিনচালকদের দক্ষতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর এ দক্ষতা বৃদ্ধির উপায় হলো প্রশিক্ষণ।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের সূহা কর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত -বক্তব্যটি যৌক্তিক।
প্রশাসন হলো প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ স্তর। এখানে উদ্দেশ্য, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, কৌশল ও নীতি নির্ধারণ করা হয়। প্রশাসনিক কার্যাবলি যারা সম্পাদন করেন, তাদেরকে প্রশাসক বলে।
উদ্দীপকের জনাব সূহা একটি উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য নির্ধারণ, নীতিমালা প্রস্তুত, পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাজারজাতকরণ কৌশল নির্ধারণ করেন।
জনাব সূহার উক্ত কাজ মূলত প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্যের সাথে জড়িত। তিনি যে নীতি নির্ধারণ করে দেন তা প্রতিষ্ঠানের কর্মীবৃন্দ বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকেন। প্রতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্যে তিনি যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। এসব কাজ প্রশাসকবৃন্দ করে থাকেন। তাই বলা যায়, প্রতিষ্ঠানে জনাব সূহা কর্র্র্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৬
জনাব আরিয়ান XYZ কোম্পানির একজন ব্যবস্থাপক। তিনি যথাসময়ে অফিসে আসেন এবং যথানিয়মে কাজ সম্পাদন করে অফিস ত্যাগ করেন। তিনি নিজের কাজে খুব দক্ষ এবং প্রয়োজনে অন্যকেও বোঝাতে সক্ষম হন। সহকর্মীদের পরামর্শ ধৈর্য ধরে শোনেন এবং আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। তবে তার অধীনস্থ কর্মীদের মধ্যে শুধু নিজ এলাকার কর্মীদের ঠিকমতো ছুটি দেন এবং অন্যদের সহজে ছুটি দিতে চান না। [সি. বো. ১৭]
ক. কেন্দ্রীকরণ কী? ১
খ. কার্যবিভাজন নীতির ফলে কীভাবে কার্যে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. উদ্দীপকে জনাব আরিয়ান কর্তৃক হেনরি ফেয়ল প্রদত্ত ব্যবস্থাপনার কোন নীতি উপেক্ষিত হয়েছে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত জনাব আরিয়ানের কর্মকাণ্ড আদর্শ ব্যবস্থাপকের গুণাবলির ভিত্তিতে মূল্যায়ন করো। ৪
৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
কেন্দ্রীকরণ বলতে উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনার হাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে রাখাকে বোঝায়।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রতিষ্ঠানের কাজকে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে প্রত্যেক কর্মীর দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব সুস্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট করে দেওয়াকে কার্যবিভাজন বলে।
এরূপ বিভাজনের ফলে প্রত্যেক বিভাগ, উপবিভাগ এবং সেই সাথে এতে নিয়োজিত জনশক্তি ও তাদের কাজকে সুনির্দিষ্ট করা সম্ভব হয়। তাছাড়া একই ধরনের কাজ করায় প্রতিটি বিভাগে কর্মরত কর্মীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়। এতে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতাও বাড়ে।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের জনাব আরিয়ান কর্তৃক হেনরি ফেয়ল প্রদত্ত ব্যবস্থাপনার সাম্যের নীতি উপেক্ষিত হয়েছে।
সাম্যের নীতিতে অধস্তনদের সবার প্রতি সমান আচরণ ও স্নে প্রদর্শন করা হয়। এ নীতি অনুযায়ী একজন ঊর্ধ্বতন তার সব অধস্তনকে সমান চোখে দেখেন, সমান আচরণ ও স্নে প্রদর্শন করেন।
উদ্দীপকের জনাব আরিয়ান XYZ কোম্পানির একজন ব্যবস্থাপক। তিনি নিজের কাজে খুব দক্ষ এবং প্রয়োজনে অন্যকেও বোঝাতে সক্ষম হন। তিনি সহকর্মীদের পরামর্শ ধৈর্য ধরে শোনেন এবং আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদান করেন। তবে তার অধীনস্থ কর্মীদের মধ্যে শুধু নিজ এলাকার কর্মীদের ঠিকমতো ছুটি দেন এবং অন্যদের সহজে ছুটি দিতে চান না। এ কাজটির মাধ্যমে তিনি কর্মীদের সাথে পক্ষপাতিত্ব করছেন, যা সাম্যের নীতিকে উপেক্ষিত করেছে। তাই বলা যায়, জনাব আরিয়ানের শেষোক্ত কাজটি সাম্যের নীতির পরিপন্থী।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে বর্ণিত জনাব আরিয়ানের কর্মকাণ্ডের ভিত্তিতে সম্পূর্ণভাবে তাকে আদর্শ ব্যবস্থাপক বলা যায় না।
একজন আদর্শ ব্যবস্থাপক বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝানো হয় যিনি ব্যবস্থাপকীয় কার্যসম্পাদনে সর্বোচ্চ দক্ষতার পরিচয় দেন। তিনি কর্মীদের সাথে কোনো বৈষম্যমূলক আচরণ করেন না। অধস্তন কর্মীরা তাকে অনুসরণ করেন।
উদ্দীপকের জনাব আরিয়ান XYZ কোম্পানির একজন ব্যবস্থাপক। তিনি যথাসময়ে অফিসে আসেন এবং যথানিয়মে কাজ সম্পাদন করেন, যা আদর্শ ব্যবস্থাপকের সময়ানুবর্তিতা ও নিয়মানুবর্তিতা গুণাবলির সাথে সম্পৃক্ত। তিনি নিজের কাজে খুব দক্ষ এবং প্রয়োজনে অন্যকেও বোঝাতে সক্ষম হন। এ কাজ দ্বারা তার ব্যবস্থাপকীয় দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি সহকর্মীদের পরামর্শ ধৈর্য ধরে শোনেন এবং আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদান করেন, যা আদর্শ ব্যবস্থাপকের ধৈর্য ও গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্যের অন্তর্ভুক্ত।
তবে তিনি অধীনস্থ কর্মীদের মধ্যে শুধু নিজ এলাকার কর্মীদের ঠিকমতো ছুটি দেন এবং অন্যদের সহজে ছুটি দিতে চান না। এতে তিনি সবার প্রতি সমান আচরণ করছেন না। এটি কোনো আদর্শ ব্যবস্থাপকের নৈতিক কাজ না। এজন্য জনাব আরিয়ানের সাংগঠনিক জ্ঞান থাকা সত্তে¡ও তাকে আদর্শ ব্যবস্থাপক বলা ঠিক হবে না।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৭
মি. জাকিউল বন্ধন গ্রুপের একজন ব্যবস্থাপক। তিনি তার অধস্তনদের সবাইকে একই চোখে দেখেন। অধস্তনরাও তাকে শ্রদ্ধা করেন। ফলে তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রয়েছে। একদিন অধস্তনদের মধ্যে কাজ নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তিনি তার অভিজ্ঞতা ও তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে দ্রুততার সাথে সমস্যা সমাধান করেন।
[য. বো. ১৭]
ক. বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক কে? ১
খ. ব্যবস্থাপনা চক্র কী? ব্যাখ্যা করো। ২
গ. মি. জাকিউল ব্যবস্থাপনার কোন নীতি অনুসণ করেন? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকের আলেকে মি. জাকিউলকে কি আদর্শ ব্যবস্থাপক বলা যায়? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও। ৪
৭ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক হলেন আমেরিকান মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ফ্রেডেরিক উইন্সলো টেলর (Frederick Winslow
Taylor)।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনার কাজসমূহ চক্রাকারে আবর্তিত হওয়াকে ব্যবস্থাপনা চক্র বলে।
ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হলো পরিকল্পনা করা। পরিকল্পনার আলোকে কর্মীসংস্থান করা হয়। অতঃপর তাদেরকে কাজের নির্দেশনা দেয়া হয়। কাজের গতি ও নির্ভুলতা নিশ্চিতের জন্য কর্মীদেরকে প্রেষণা প্রদান করা হয়। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজগুলো হচ্ছে কি না, তার সমন্বয় ও প্রয়োজনমতো নিয়ন্ত্রণ কার্যসম্পাদন করা হয়। নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি পাওয়া গেলে তা সংশোধনের জন্য আবার পরিকল্পনা করা হয়। এ কাজগুলো একটার পর একটা চক্রাকারে সম্পাদিত হয়ে থাকে। তাই একে ব্যবস্থাপনা চক্র বলা হয়।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের মি. জাকিউল ব্যবস্থাপনার সাম্যের নীতি অনুসরণ করেছেন।
সাম্যের নীতিতে অধস্তনদের সবার প্রতি সমান আচরণ ও স্নে প্রদর্শন করা হয়। এ নীতি অনুযায়ী একজন ঊর্ধ্বতন তার সকল অধস্তনকে সমান চোখে দেখেন, সমান আচরণ ও স্নে প্রদর্শন করেন।
উদ্দীপকের মি. জাকিউল ব্যবস্থাপক হিসেবে অধস্তনদের সবাইকে সমানভাবে দেখেন, একই রকম আচরণ ও স্নে প্রদর্শন করেন। অর্থাৎ তিনি সবার সাথে সমআচরণ করেন। কোনো পক্ষপাতিত্ব করেন না। এতে কর্মীদের মনোবল, আনুগত্য এবং কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি পায়। এসব বৈশিষ্ট্য সাম্যের নীতির সাথে সংগতিপূর্ণ। সুতরাং, মি. জাকিউল তার প্রতিষ্ঠানে সাম্যতার নীতি প্রয়োগ করেছেন।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের আলোকে মি. জাকিউলকে একজন আদর্শ ব্যবস্থাপক বলা যায়।
একজন আদর্শ ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন। কর্মীদের কাছ থেকে কাজ আদায় করার জন্য তিনি সবার সাথে সমআচরণ করেন। প্রতিষ্ঠানে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তিনি দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন।
উদ্দীপকের মি. জাকিউল সব কর্মীকে একই দৃষ্টিতে দেখেন। প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য তিনি সব কর্মীকে শৃঙ্খলার মধ্যে রাখেন। এজন্য কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রয়েছে।
উদ্দীপকের মি. জাকিউল ব্যবস্থাপকীয় দক্ষতার মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। একদিন অধস্তনদের মধ্যে কাজ নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তিনি তার অভিজ্ঞতা ও তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে দ্রুততার সাথে সমস্যা সমাধান করেন। এতে কাজের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তিনি সমস্যা সমাধান করে প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করেন। আদর্শ ব্যবস্থাপকবৃন্দ এসব কাজ করে থাকেন। তাই বলা যায়, আদর্শ ব্যবস্থাপকের সব গুণই মি. জাকিউলের কার্যক্রম বা পদক্ষেপে প্রতিফলিত হয়েছে।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৮
মি. মানিক একটা নতুন শিল্প ইউনিটের ব্যবস্থাপক। তিনি তার শিল্প প্রতিষ্ঠানে যে সকল কাজ হবে তা চিহ্নিত করে তাকে প্রকৃতি অনুযায়ী কতগুলো প্রধান ভাগে ভাগ করেন এবং তার অধীনে বিভিন্ন উপবিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। অতঃপর যেখানে যে মানের জনশক্তি প্রয়োজন তা নিয়োগ দিয়ে তাদের দায়িত্ব-কর্তৃত্ব বুঝিয়ে দেন। শুধু যোগ্য ব্যক্তিকেই যোগ্য স্থানে নিয়োগ নয়, এর বাইরে অন্যান্য উপায়-উপকরণাদিকেও সঠিক স্থানে স্থাপন করেন। এতে কাজ চলাকালে তিনি সুবিধা পাচ্ছেন। [ব. বো. ১৭]
ক. প্রশাসন কী? ১
খ. কেন্দ্রীকরণ ও বিকেন্দ্রীকরণ বলতে কী বোঝ? ২
গ. মি. মানিক প্রথমত হেনরি ফেয়লের কোন নীতি অনুসরণ করেছেন তা ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. উদ্দীপকে উলেখ্য যে নীতির অনুসরণ উক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য কাম্য তা বিশ্লেষণ করো। ৪
৮ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ স্তর যেখানে উদ্দেশ্য, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, কৌশল ও নীতি নির্ধারণ করা হয় তাকে প্রশাসন বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
কেন্দ্রীকরণ বলতে উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনার হাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে রাখাকে বোঝায়।
অন্যদিকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনার হাতে না রেখে বিভিন্ন স্তরের ব্যবস্থাপকদের নিকট প্রদান করাকে বলা হয় বিকেন্দ্রীকরণ। কেন্দ্রীকরণের ফলে প্রতিষ্ঠানের অধস্তন কর্মীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ না থাকায় তাদের গুরুত্ব হ্রাস পায়, কিন্তু বিকেন্দ্রীকরণের ফলে কর্মীদের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের মি. মানিক প্রথমত হেনরি ফেয়লের কর্মবিভাজনের নীতি অনুসরণ করেছেন।
কর্মবিভাজনের নীতিতে প্রতিষ্ঠানের কাজকে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব সুস্পষ্টভাবে নির্র্দিষ্ট করা হয়। এর ফলে প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সাথে কাজ করে সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়।
উদ্দীপকের শিল্প প্রতিষ্ঠানে মি. মানিক কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী কতগুলো প্রধান ভাগে কাজগুলোকে ভাগ করেন এবং তার অধীনে বিভিন্ন উপবিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। কাজ ভাগ করে দেওয়ার ফলে কর্মীরা নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে অবগত থাকেন। অন্যদিকে প্রত্যেকের কাজ নির্দিষ্ট থাকায় জবাবদিহিতা সুনিশ্চিত হয়। এসব বৈশিষ্ট্য কর্মবিভাজন নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, মি. মানিক হেনরি ফেয়লের কর্মবিভাজনের নীতি অনুসরণ করেছেন।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের মি. মানিক প্রথমে হেনরি ফেয়লের কর্মবিভাজন নীতি অনুসরণ করেছেন এবং পরবর্তীতে তিনি শৃঙ্খলার নীতি অনুসরণ করেছেন, যা যেকোনো প্রতিষ্ঠানের সফল হওয়ার জন্য কাম্য।
শৃঙ্খলার নীতিতে যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য স্থানে নিয়োগ এবং সঠিক বস্তুকে সঠিক স্থানে স্থাপন করা হয়। যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য স্থানে নিয়োগ করা না গেলে কখনোই তার নিকট থেকে কাক্সিক্ষত ফল লাভ করা সম্ভব নয়।
উদ্দীপকের মি. মানিক একটা নতুন শিল্প ইউনিটের ব্যবস্থাপক । তিনি তার প্রতিষ্ঠানে সঠিক স্থানে যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দিয়ে তাদের দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব বুঝিয়ে দেন। এছাড়া অন্যান্য (কাঁচামাল, মেশিন, যন্ত্রপাতি) উপায় উপকরণাদিও সঠিক স্থানে স্থাপন করেন।
যোগ্য ব্যক্তির মাধ্যমে সঠিক কাজ করানোর ফলে মি. মানিকের প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। এতে কাজে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। কাজেও গতি আসে। আবার সঠিক বস্তু সঠিক স্থানে রাখার ফলে প্রতিষ্ঠানের সম্পদের সদ্ব্যবহার হয়। এতে কাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ কমে যায়। এ ধরনের শৃঙ্খলার নীতি অনুসরণ যেকোনো প্রতিষ্ঠানের জন্যই কাম্য।
সৃজনশীল প্রশ্ন-০৯
জনাব চৌধুরী ‘PQR’ কোম্পানির সচিব। তিনি প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও নীতিনির্ধারণ তথা চিন্তন-মনন কার্যপ্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট। জনাব LR এবং জনাব AT কোম্পানির দুইজন এরিয়া ম্যানেজার। তারা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও নীতি বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন, নেতৃত্ব প্রদান ও নিয়ন্ত্রণের মতো কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকেন। জনাব ‘টিটু’ উক্ত কোম্পানির একজন সুপারভাইজার। [ঢা. বো. ১৬]
ক. ব্যবস্থাপনা কী? ১
খ. ব্যবস্থাপনার সাম্যতা নীতিটি ব্যাখ্যা করো। ২
গ. জনাব LR এবং জনাব AT একই সাথে জনাব টিটুকে দু’ধরনের কাজের নির্দেশ দিলে ব্যবস্থাপনার কোন নীতি লঙ্ঘিত হবে? ব্যাখ্যা করো। ৩
ঘ. ব্যবস্থাপনার স্তরের ভিত্তিতে জনাব চৌধুরী ও জনাব LR-এর কাজের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো। ৪
৯ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয়সাধন ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সম্পদসমূহকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর প্রক্রিয়াকে ব্যবস্থাপনা বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
কোনো প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মীর প্রতি সমান আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শনের নীতিকেই ব্যবস্থাপনার সাম্যের নীতি বলে।
এ নীতি ন্যায়পরায়ণতার সাথে সম্পৃক্ত। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের সকল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাদের অধস্তনদের সমান চোখে দেখেন। ফলে প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন ও অধস্তন কর্মকর্তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক সৃষ্টি হয়, যা প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকের জনাব LR এবং জনাব AT একই সাথে জনাব টিটুকে দু’ধরনের কাজের নির্দেশ দিলে ব্যবস্থাপনার আদেশের ঐক্য নীতিটি লঙ্ঘিত হবে।
একজন কর্মীর আদেশকর্তা হবেন একজন ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা- এমন নীতিকে ব্যবস্থাপনায় আদেশের ঐক্য নীতি বলে। প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য আদেশের ঐক্য বজায় রাখা জরুরি।
উদ্দীপকের জনাব টিটু একজন সুপারভাইজার। তার দুজন আদেশদাতা আছেন। একজন জনাব LR এবং অন্যজন জনাব AT। তারা দুজনই কোম্পানিটির এরিয়া ম্যানেজার। জনাব টিটু অধস্তন কর্মকর্তা হিসেবে তাদের নির্দেশ মানতে বাধ্য। কিন্তু একসাথে দুজন নির্দেশদাতা বা বস থাকায় তিনি একই সাথে দুধরনের নির্দেশ পান। তাই তিনি কোনো নির্দেশই ভালোভাবে পালন করতে পারেন না। তাই বলা যায়, টিটু’র আদেশদানে দুইটি উৎস বিদ্যমান থাকায় আদেশের ঐক্য নীতির লঙ্ঘন হয়েছে।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
ব্যবস্থাপনার স্তরের ভিত্তিতে জনাব চৌধুরী উচ্চস্তরে এবং জনাব LR মধ্যস্তরে অবস্থান করেন।
ক্ষমতা অনুসারে ব্যবস্থাপনার বিন্যাসকে ব্যবস্থাপনার স্তর বলে। ব্যবস্থাপনার স্তর তিনটি। যথা: উচ্চ, মধ্য এবং নিম্নস্তর।
জনাব চৌধুরী 'PQR' কোম্পানিটির সচিব। একজন সচিব হলেন প্রশাসক, যিনি নীতি নির্ধারণ করেন। ব্যবস্থাপনার উচ্চস্তরে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় এবং তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকে নিম্নস্তরে। জনাব চৌধুরী যেহেতু প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও নীতি নির্ধারণ করেন, সেহেতু তার কাজের প্রকৃতি উচ্চস্তরের।
অন্যদিকে জনাব LR একজন এরিয়া ম্যানেজার। তিনি একটি এলাকার ব্যবস্থাপক বা প্রধান হিসেবে কাজ করেন। তিনি উচ্চস্তর কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত অধস্তনদের দিয়ে বাস্তবায়ন করেন। ব্যবস্থাপনার মধ্যস্তরে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক, সহকারী ব্যবস্থাপক ও এরিয়া ম্যানেজার অবস্থান করেন। জনাব LR উচ্চস্তর ও নিম্নস্তরের যোগসূত্র হিসেবে কাজ করেন। তাই বলা যায়, জনাব LR মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপক।
সৃজনশীল প্রশ্ন-১০
অফিস পিয়ন
শামীম অধ্যক্ষের চিঠিগুলো
নিয়ে পোস্ট অফিসে
যাওয়ার সময় উপাধ্যক্ষ
মহোদয় তাকে কতকগুলো
কাগজ দিয়ে ফটোকপি
করে আনতে বললেন।
ফটোকপি করা শেষে
শামীম পোস্ট অফিসে
গিয়ে জানতে পারলো
ততক্ষণে প্রথম
ডাক চলে গেছে।
যথাসময়ে চিঠিটি
ডাকে না দেওয়ার
কারণে অধ্যক্ষ মহোদয়
পিয়ন শামীমকে কৈফিয়ত
তলব করেন। [রা.
বো. ১৬]
ক. ব্যবস্থাপনা
কী? ১
খ. জোড়া
মই শিকল নীতি
বলতে কী বোঝ?
২
গ. উদ্দীপকে
ব্যবস্থাপনার কোন
নীতিটি লঙ্ঘিত হয়েছে?
ব্যাখ্যা করো।
৩
ঘ. উদ্দীপকে
বর্ণিত অধ্যক্ষ মহোদয়
কর্তৃক পিয়ন শামীমকে
কৈফিয়ত তলব করার
যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ
করো। ৪
১০ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ
'ক' নং প্রশ্নের উত্তর:
লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে
পরিকল্পনা প্রণয়ন,
সংগঠিতকরণ, কর্মীসংস্থান,
নির্দেশনা, প্রেষণা,
সমন্বয়সাধন ও
নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে
প্রতিষ্ঠানের সম্পদসমূহকে
সঠিকভাবে কাজে
লাগানোর প্রক্রিয়াকে
ব্যবস্থাপনা বলে।
'খ' নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ
থেকে নিম্ন পর্যায়
পর্যন্ত কর্মীদের
কর্তৃত্বের চেইন
বা শিকল বজায়
রাখাকে জোড়া মই
শিকল নীতি বলে।
কর্তৃত্ব ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তা থেকে
ধাপে ধাপে অধস্তনের
কাছে নেমে আসে।
ফলে প্রতিটি বিভাগ,
উপবিভাগ ও
ব্যক্তি কর্তৃত্বের
শিকলে কারো না
কারো সাথে সম্পর্কযুক্ত
থাকে। এরূপ শিকল
কর্মীদের কর্তৃত্বের
প্রবাহ ও যোগাযোগের
পথ নির্দেশ করে।
'গ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে ব্যবস্থাপনার
আদেশের ঐক্য নীতি
লঙ্ঘিত হয়েছে।
আদেশের ঐক্য
হলো একজন কর্মীর
আদেশদাতা হবে
একজন মাত্র ব্যক্তি।
কোনো অধস্তন একজন
ঊর্ধ্বতনের কাছ
থেকে প্রয়োজনীয় আদেশ,
উপদেশ ও পরামর্শ
গ্রহণ করবে। তিনি
তার ঊর্ধ্বতনের কাছে
জবাবদিহি করবেন।
জনাব শামীম
একজন অফিস পিয়ন।
অধ্যক্ষ সাহেব
তাকে কিছু চিঠি
পোস্ট অফিসে জমা
দিতে বলেন। আবার
উপাধ্যক্ষ সাহেব
শামীমকে কতগুলো
কাগজ ফটোকপি করতে
বলেন। যার ফলে
শামীমের ক্ষেত্রে
যথাসময়ে চিঠি
পোস্ট করা সম্ভব
হয় না। দুই
পক্ষের নির্দেশনার ফলে
শামীম যথাসময়ে কাজ
করতে ব্যর্থ হন।
তিনি যদি একজনের
আদেশ অনুযায়ী কাজ
করতেন, তাহলে এ
সমস্যা হতো না।
তাই বলা যায়,
জনাব শামীম আদেশের
ঐক্য নীতির অভাবে
নির্ধারিত কাজ
করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
'ঘ' নং প্রশ্নের উত্তর:
উদ্দীপকে অধ্যক্ষ
মহোদয় কর্তৃক পিয়ন
শামীমকে কৈফিয়ত
তলব করা যৌক্তিক
বলে আমি মনে
করি।
কার্যনির্দিষ্টতার নীতি
অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের
প্রতিটি বিভাগ
এবং প্রত্যেকের মধ্যে
সুষ্ঠুভাবে কাজ
সম্পন্ন হচ্ছে
কি না, তার
জিজ্ঞাসাবাদকে জবাবদিহিতা
বলে। এর ফলে
প্রতিটি কাজের
পূর্ণ তত্ত্বাবধায়ন করা
হয়। কোনোরূপ বিচ্যুতি
ঘটলে সহজে তার
সংশোধন করা হয়।
জনাব শামীম
অধ্যক্ষ স্যারের
নির্দেশ অনুযায়ী
যথাসময়ে চিঠি
পোস্ট না করার
কারণে জবাবদিহিতার শিকার
হয়েছেন। কারণ
চিঠিটি সময়মতো পৌঁছাতে
না পারায় ডাক
বহন করা পরিবহনটি
চলে যায়, ফলে
সমস্যার সৃষ্টি
হয়।
যদি জনাব শামীমকে দ্বৈত নির্দেশনা পালন করতে না হতো তাহলে তিনি কাজটি সমাধান করতে পারতেন। অধ্যক্ষ সাহেবের তত্ত্বাবধানের ফলে সমস্যাটি সহজে প্রকাশ পায়। এ ধরনের ত্রুটি যেন ভবিষ্যতে না ঘটে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। এতে অধ্যক্ষ স্যার এবং পিয়ন শামীমের ভুল বোঝাবুঝি অতি সহজে সমাধান হবে। তাই বলা যায়, অধ্যক্ষ স্যারের জিজ্ঞাসাবাদ অধিক যুক্তিযুক্ত।
No comments